বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন বরফভেদী জাহাজ সাগরে ভাসাল রাশিয়া। মেরুপ্রদেশে সামরিক দখল নেওয়া এর একটা অন্যতম লক্ষ্য, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
২০১৬ সালে সেন্ট পিটার্সবার্গের বাল্টিক শিপইয়ার্ড থেকে এটি পরীক্ষামূলক ভাবে রওনা দেয় উত্তর দিকে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, রুশ সামরিক অস্ত্রভাণ্ডারকে আরও উন্নত করতেই এই জাহাজ এনেছে রাশিয়া।
২০১৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে এটি তৈরি করা শুরু হয়েছিল। জাহাজটি ৫৮৬ ফুট লম্বা, ১০০ ফুট প্রশস্ত, প্রায় ১০ ফুট পুরু, ১৩ ফুট গভীর বরফ ভেদ করতে সক্ষম। ২০১৭ সালের ১৭ অগস্ট উত্তর মেরুতে পৌঁছে রেকর্ডও গড়ে এই জাহাজটি।
জাতীয় প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে এটি অন্যতম অস্ত্রও বলা যায়। আর্কটিকা নামের এই জাহাজে দুটি জল পরিশোধনকারী ব্যবস্থা রয়েছে। ৭০ টন জল পরিশুদ্ধ করতে সক্ষম এটি। এবং একবারে ৩৩,৫৪০ লিটার জল সরাতেও সক্ষম।
এই জাহাজটির প্লবতা ‘ভ্যারিয়েবল’, বাল্টিকের ওই কারখানায় ১০ হাজার টন ধাতব কাঠামো রয়েছে, যা এই সিরিজের পরবর্তী জাহাজ তৈরিতে কাজে লাগানো হবে।
আর্কটিকার ক্ষেত্রে দুটি আরআইটিএম ক্ষমতাসম্পন্ন নিউক্লিয়ার পাওয়ার রিয়্যাক্টর রয়েছে, এটি মস্কোর কাছে পডোলস্কে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ২০১৬ সালের জুন মাসে। বসানো হয়েছে দুটি চুল্লিও।
আর্কটিকায় সবচেয়ে শক্তিশালী ক্ষমতাসম্পন্ন যমজ রিয়্যাক্টর বা পরমাণু চুল্লি রয়েছে। মেরুপ্রদেশে এর ফলে রুশ আধিপত্য আরও বেশি করে জাঁকিয়ে বসবে বলেই মনে করছেন, আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।
১ লক্ষ ৩৬০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে এই জাহাজটি নির্মাণে। ৪০ বছর আয়ু এই আর্কটিকার, ২০ শতাংশের কম ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ জ্বালানি প্রতি সাত বছর অন্তত ভরতে হবে এতে।
রুশ সংবাদ সংস্থার খবর অনুযায়ী, এই সিরিজের দুটি বরফভেদী জাহাজ সাইবেরিয়া ও উরাল ২০১৯ সালের ডিসেম্বর ও ২০২০ সালের ডিসেম্বরে আনা হবে। মোট ৪০টি বরফভেদী জাহাজ রয়েছে রাশিয়ার।
পরমাণুশক্তি চালিত বরফভেদী রুশ জাহাজের পাল্টা জাহাজ আনতে চলেছে আমেরিকাও। ২০২০ সালে নতুন একটি পরমানবিক ক্ষমতা সম্পন্ন বরফভেদী জাহাজ আনার কথা আমেরিকার। এ ছাড়াও ২০১৮ সালের শেষের দিকে চিনও এমন একটি জাহাজ আনার কথা ঘোষণা করেছে।