নদীগর্ভ থেকে অবাধে চলছে বালিখনন। ছবি: রয়টার্স।
আরও এক সঙ্কটের মুখে পড়তে চলেছে বিশ্ব। আর তা হল বালির সঙ্কট। সে দিন খুব একটা দূরে নেই বলেও সতর্কবার্তা দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বালির বিশাল চাহিদা। বালি ছাড়া কোনও নির্মাণকাজের কথা ভাবাই যায় না। কিন্তু সেই বালিকেই পৃথিবীর বুক থেকে অবৈধ ভাবে খালি করে দেওয়ায় সমূহ সঙ্কটের মুখে পড়তে পারে বিশ্ব।
রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, সমুদ্রগর্ভ হোক বা নদীগর্ভ, অবাধে, অবৈধ এবং অবৈজ্ঞানিক ভাবে দেদার বালি তোলা চলছে। যে গতিতে বালি তোলা হচ্ছে, সেই গতিতে বালি সৃষ্টি হতে পারছে না। বলা ভাল, যে প্রলম্বিত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে বালি সৃষ্টি হয়, সেই সময় দেওয়া হচ্ছে না। ফলে বালি সৃষ্টির আগেই খালি হয়ে যাচ্ছে। ইউনাইটেড নেশনস এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনইপি)-এর অধিকর্তা শীল অগ্রবাল খান বলেন, “যদি আমরা এখনই এ বিষয়ে সতর্ক হই তা হলে বালির সঙ্কট রোখা সম্ভব হবে।”
সমীক্ষা বলছে, গত দু’দশকের মধ্যে কাচ, কংক্রিট এবং নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবহার গোটা বিশ্বে তিন গুণ বেড়েছে। যা এক বছরের মধ্যে বেড়ে হয়েছে পাঁচ হাজার কোটি টন। আর এর ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদী, উপকূলরেখা। এমনকি ছোট ছোট দ্বীপগুলিও পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বালির বিশাল ভূমিকা রয়েছে। বিশেষ করে ঝড় রুখে দেওয়া, নদী এবং সমুদ্রের ক্ষয় রোধ করা এবং বহু প্রাণীর আশ্রয়স্থল হিসেবেও কাজ করে। অবৈধ এবং অবৈজ্ঞানিক ভাবে ক্রমাগত বালি তোলার ফলে পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিবেদন বলছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘ নদী মেকং থেকে ক্রমাগত বালি তোলার ফলে বহু দ্বীপ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। উর্বর জমিতে লবণের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার শ্রীলঙ্কায় নদী থেকে বালি তোলার ফলে জলের প্রবাহ বিপরীতমুখী হয়ে যাচ্ছে।