মশা। ছবি—শাটারস্টক।
ম্যালেরিয়ামুক্ত হল চিন। পেল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র শংসাপত্রও। প্রায় সাত দশকের প্রচেষ্টায় নিজেদের ম্যালেরিয়ামুক্ত করতে পেরেছে চিন। ম্যালেরিয়া ঠেকাতে ওষুধ, কড়া নজরদারি এবং মানুষ এবং পরজীবীদের সঙ্গে অ্যানোফিলিস মশার সংক্রমণ শৃঙ্খল ভাঙতে প্রযুক্তির ব্যবহার করেই ম্যালেরিয়ার মতো রোগ থেকে নিজেদের মুক্ত করতে পেরেছে চিন।
চারের দশকে চিনে প্রতি বছর প্রায় তিন কোটি লোক আক্রান্ত হতেন ম্যালেরিয়ায়। প্রায় তিন লক্ষ আক্রান্ত মারাও যেতেন সে দেশে। সেই পরিস্থিতি থেকে লড়াই শুরু করেছিল চিন। এই লড়াইয়ের ফল ২০১৭ সালে কেউ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়নি সে দেশে।
ম্যালেরিয়ামুক্ত চিন গড়ার উদ্যোগ শুরু হয়েছিল ১৯৫০ থেকে। এ জন্য বেশ কিছু কাজ নিরন্তর ভাবে করেছে পৃথিবীর সবথেকে বেশি জনসংখ্যার দেশ। সে দেশে যাঁদের ম্যালেরিয়া হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে, তাঁদের মধ্যে অ্যান্টিম্যালেরিয়া ওষুধ বিতরণ করা হয়েছে। মশার প্রজনন ক্ষেত্র তৈরি হতে না দেওয়া, মশার বৃদ্ধি রোধে কীটনাশক ছড়ানো— এই সব কাজ নিময় করে করেছে চিন।
ছয়ের দশকে সে দেশের রসায়নবিদ থু ইউইউ ওয়ার্মউড (আর্টেমিসিয়া অ্যানুয়া) থেকে আর্টিমিসিনিন (ম্যালেরিয়া প্রতিরোধী ওষুধ) নিষ্কাশন করতে সমর্থ হয়েছিলেন। ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে এই উপাদান কাজে লাগিয়েছিল চিন। ২০১৫ সালে ম্যালেরিয়ার ওষুধ আবিষ্কারের জন্য নোবেল পুরস্কার পান তিনি।
এ ভাবে দশকের পর দশক পরিকল্পনামাফিক লড়াইয়ের সুফল হিসাবে নয়ের দশকে সে দেশে বাৎসরিক ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা নেমে আসে ৫ হাজারে। ম্যালেরিয়া থেকে পুরোপুরি মুক্তি পেতে ‘১-৩-৭’ কৌশল রূপায়ণ করেছিল চিন। এক দিনের মধ্যে চিহ্নিতকরণ, তিন দিনের মধ্যে তদন্ত এবং সাত দিনের মধ্যে পাল্টা ব্যবস্থা। এ ভাবে হেঁটেই ম্যালেরিয়ামুক্ত হয়েছে বিশ্বের সবথেকে বেশি জনসংখ্যার এই দেশ। তবে ২০১৯ সালে আলজিরিয়া এবং আর্জেন্টিনাকেও ম্যালেরিয়ামুক্ত ঘোষণা করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।