প্রতীকী ছবি।
গত বছরের শেষ দিক থেকে যখন ভারতীয় অর্থনীতির দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানো নিয়ে আশার পারদ চড়ছিল, তখন জানা ছিল না কয়েক মাস পরেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এসে তা বানচাল করে পুনরুজ্জীবন প্রক্রিয়া আরও পিছিয়ে দেবে। সেই ঢেউ অতিক্রম করে এ বার যখন ফের চাঙ্গা হওয়ার লক্ষণ স্পষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল, তখন সামনে করোনার নতুন স্ট্রেন ওমিক্রন। ফের অর্থনীতির এগোনোর পথ রুদ্ধ হবে কি না জানা নেই। তবে সোমবার মুডি’জ় অ্যানালিটিক্স, গোল্ডম্যান স্যাক্স-এর মতো উপদেষ্টা সংস্থা সতর্ক করেছে সব দেশকেই।
মুডি’জ় বলেছে, ওমিক্রন নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। সংস্থার অর্থনীতিবিদ স্টিভ কোচরেন-এর দাবি, সব কিছু নির্ভর করবে সংক্রমণের গতি, ভয়াবহতা, হাসপাতালে ভর্তি, মৃত্যুর হার, প্রতিষেধক ও ওষুধের কার্যকারিতার উপরে। যদিও এত তাড়াতাড়ি পুরো ঝুঁকি মাপা সম্ভব নয়।
গোল্ডম্যান স্যাক্স-এর আশঙ্কা, আগামী বছরের প্রথম তিন মাসেই সংক্রমণ প্রবল হলে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বিশ্বের জিডিপি মাত্র ২% বাড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে ২০২২ সালে বৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৪.২%। বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী বছরে বিশ্ব অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা ছিল। চাহিদা বেড়েছে। বর্তমানে নীতিপ্রণেতারা মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানার চেষ্টা করছেন। কিন্তু ওমিক্রনের দাপট বাড়লে সেই সুযোগ মিলবে কি না সন্দেহ। কারণ, তাকে রুখতে ফের লকডাউন করতে হলে চাহিদার সঙ্গে পণ্য-পরিষেবা সরবরাহও ফের ধাক্কা খাবে। তখন মূল্যবৃদ্ধি ও কম আর্থিক বৃদ্ধির ফাঁদে পা আটকাবে।
মুডি’জ়-এর রিপোর্টে সতর্কবার্তা, যে সব জায়গায় টিকাকরণের হার কম, সেগুলির হাত ধরে বিশ্ব অর্থনীতির ঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কা। প্রতিষেধকের প্রয়োগ শ্লথ ইঙ্গিত দিয়ে এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের যে দেশগুলির নাম করা হয়েছে, সেই তালিকায় মায়ানমার, লাওস, ইন্দোনেশিয়া, হংকং, তাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ফিলিপিন্সের মতো একগুচ্ছ দেশের সঙ্গে আছে ভারতও। তারা বলেছে এই সব দেশে টিকাকরণ ৬৫ শতাংশেরও কম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) ওমিক্রণের সংক্রমণ নিয়ে সব দেশকে প্রস্তুত থাকতে বলছে। রাষ্ট্রপুঞ্জ তাদের ১৯৪টি সদস্যকে আর্জি জানিয়েছে, টিকাকরণের হার যেন বাড়ানো হয় অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে।