ওই মহিলাকে তিন বার বিক্রি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। প্রতীকী ছবি।
ঘরের লক্ষ্মীর সঙ্গে জন্তুর মতো আচরণ স্বামীর! বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীর উপর চলত নির্মম অত্যাচার। শেষে মানসিক রোগের শিকার হন মহিলা। সেই অবস্থাতেই তাঁর সঙ্গে জোর করে যৌনতায় মত্ত হতেন স্বামী। স্ত্রীর গলায় শিকল পরিয়ে ঘরে বন্দি করে রেখেছিলেন ওই ব্যক্তি। খাবার, জল পর্যন্ত দেওয়া হত না। এমন অভিযোগ ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল চিনে। শুক্রবার এই ঘটনায় সাজা শুনিয়েছে চিনের আদালত।
মহিলার স্বামীকে ৯ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় আরও ৫ জনকে বিভিন্ন অপরাধে ৮ থেকে ১৩ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কিন্তু মহিলার উপর এ যাবৎকাল যে অকথ্য অত্যাচার চালানো হয়েছে, সেই তুলনায় শাস্তি কম বলে সরব হয়েছেন সে দেশের নাগরিকদের একাংশ।
১৯৯৮ সালে ওই মহিলাকে ইউনান প্রদেশে তাঁর বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। তখন ওই মহিলা কিশোরী ছিলেন। সেই সময় ডংহাই প্রদেশে এক কৃষকের কাছে ভারতীয় মুদ্রায় ৪৯ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছিল ওই মহিলাকে। পরের বছর, অর্থাৎ ১৯৯৯ সালে এক দম্পতির কাছে আবার ওই মহিলাকে বিক্রি করা হয়। এর পর ডং ঝিমিনের কাছে বিক্রি করা হয়েছিল ওই মহিলাকে। চিনের সংবাদমাধ্যম অনুযায়ী, ওই মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন ডং। কিন্তু স্বামীর ঘর যেন নরকবাসের সমান ছিল ওই মহিলার কাছে। ৮ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন ওই মহিলা। বার বার যৌন সম্পর্ক স্থাপনে ওই মহিলাকে জোর করতেন বলে অভিযোগ উঠেছে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে। তৃতীয় সন্তানের জন্মের পর ওই মহিলার মানসিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। সেই সময় স্কিৎজ়োফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। এই অবস্থাতেও মহিলার সঙ্গে যৌনতায় মত্ত হতেন তাঁর স্বামী।
অভিযোগ, ২০১৭ সালে একটি ঘরে ওই মহিলাকে বন্দি করে রাখেন তাঁর স্বামী। সেই ঘরে না ছিল বিদ্যুৎ, না জল। এমনকি, তাঁকে খাবার পর্যন্ত দেওয়া হত না। অসুস্থ স্ত্রীর চিকিৎসাও করাননি ডং। সেই সময় অন্য মহিলাদের সঙ্গেও শারীরিক সম্পর্ক ছিল ডঙের। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছিল সে দেশে। গত বছর ওই মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। তাঁর চিকিৎসা চলছে। বর্তমানে তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এই ঘটনায় শুক্রবার সাজা ঘোষণা হল। তবে অপরাধীদের সাজার মেয়াদ আরও বাড়ানোর দাবি তুলেছেন সমাজকর্মীরা।