International News

স্ট্যাচু অব লিবার্টির মাথায় উঠে পড়লেন এই মহিলা

এক কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা উঠে পড়েন স্ট্যাচু অব লিবার্টির গায়ে। কিছুক্ষণ পরেই নিরাপত্তা কর্মীদের নজরে আসে বিষয়টি। সঙ্গে সঙ্গে ইউএস পার্ক পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে প্রথমেই গোটা এলাকা খালি করে দেয়। এরপর শুরু হয় ওই মহিলাকে উদ্ধারের কাজ।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৮ ১৫:১৯
Share:

স্ট্যাচু অব লিবার্টিতে মহিলা। নামানোর চেষ্টা পুলিশকর্মীদের।

স্ট্যাচু অব লিবার্টির মাথায় মহিলা। আর তাঁকে নামাতে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে কার্যত নাকানি চোবানি খেল পুলিশ। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তাঁকে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয় পুলিশ। ওই মহিলা জানিয়েছেন, ট্রাম্পের উদ্বাস্তু নীতির প্রতিবাদ করতেই তিনি স্ট্যাচু অব লিবার্টিতে উঠে পড়েন।

Advertisement

বুধবার ছিল আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস। নিউ ইয়র্ক হার্বারে লিবার্টি আইল্যান্ডে জড়ো হয়েছিলেন প্রচুর মানুষ। পুলিশি নিরাপত্তার কড়াকড়িও ছিল। কিন্তু তার মধ্যেই এক কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা উঠে পড়েন স্ট্যাচু অব লিবার্টির গায়ে। স্ট্যাচুর নিচে মূল প্ল্যাটফর্মে দর্শনার্থীরা উঠতে পারেন। কিন্তু ওই মহিলা তারও উপরে যেখান থেকে মূর্তির পা শুরু হচ্ছে, সেই ঢালে উঠে পড়েন। কিছুক্ষণ পরেই নিরাপত্তা কর্মীদের নজরে আসে বিষয়টি। সঙ্গে সঙ্গে ইউএস পার্ক পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে প্রথমেই গোটা এলাকা খালি করে দেয়। এরপর শুরু হয় ওই মহিলাকে উদ্ধারের কাজ।

কিন্তু ওই মহিলা মূর্তির গায়ে এমন জায়গায় ছিলেন যে, সেখানে পৌঁছতেই বেগ পেতে হয় উদ্ধারকারীদের। এমন একটি ঢালু জায়গায় চড়ে বসেন, যে সেখানে ওঠাই দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছিল নিরাপত্তা কর্মীদের পক্ষে। তাছাড়া নাশকতার আশঙ্কায় সতর্কও থাকতে হয়েছিল। তাই প্রথমে ওই মহিলাকে নেমে আসার জন্য নানা রকম অনুরোধ-উপরোধ করা হয়। কিন্তু মহিলা নারাজ। টঙে উঠে ঠায় বসে থাকেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: তুমি অভিবাসী, ফুটবলে স্বাগত, বাস্তবের মাটিতে অবাঞ্ছিত!

এরপর ওই মহিলার কাছে গিয়েই তাঁকে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা নেয় পুলিশ। সেই মতো নিজেদের গায়ে দড়ি বেঁধে ধীরে ধীরে এগোতে থাকেন মহিলার দিকে। বেয়ে উঠতে থাকেন মূর্তির ঢালু গা বেয়ে। শেষ মুহূর্তে মহিলাকে জাপটে ধরেন দুই পুলিশকর্মী। তারপর তাঁকে নামিয়ে আনা হয়। নিয়ে যাওয়া হয় পুলিশের জিম্মায়। তবে ওই মহিলার নাম-পরিচয় বা অন্য কোনও বিষয়ে তথ্য দিতে চায়নি পুলিশ।

দেখুন সেই ভিডিও

নিউ ইয়র্ক হারবারে হাডসন নদীর উপর ৩০০ ফুট উঁচু এই স্ট্যাচু অব লিবার্টি বসানো হয় ১৮৮৬ সালে। মার্কিন স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের প্রতীক হিসাবে ধরা হয় মশাল হাতে নিয়ে জলের উপর দাঁড়িয়ে থাকা এই মূর্তিকে। আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসে সেখানে প্রতি বছরই প্রচুর পর্যটকের ভিড় জমে।

আরও পড়ুন: ঠিক আছি, বেরোব কবে

কিন্তু এ বছর শরণার্থীনিয়ে হোয়াইট হাউসের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নানাভাবে প্রতিবাদ চলছিল। তার উপর মেক্সিকো সীমান্তে উদ্বাস্তু বাবা-মা ও তাঁদের সন্তানদের আলাদা করে রাখার বিষয়টি সামনে আসার পর বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে। তাই বুধবার মার্কিন স্বাধীনতা দিবসে অতিরিক্ত সতর্ক ছিল পুলিশ-প্রশাসন।

আরও পড়ুন: ‘বরফের বাক্সে’ ঠাসাঠাসি, খাওয়া-ঘুম নেই তিন দিন

কিন্তু তার মধ্যেই সকালে ‘রাইজ অ্যান্ড রেজিস্ট’ নিউ ইয়র্ক নামে একটি সংগঠন উদ্বাস্তু নীতির প্রতিবাদ করে। ‘অ্যাবলিশ আইস’ নামে একটি ব্যানারও টাঙিয়ে দেওয়া হয় স্ট্যাচু অব লিবার্টির গায়ে। ‘আইস’ বা ‘ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট’ অর্থাৎ সেই উদ্বাস্তু নীতির প্রতিবাদেই স্লোগান তোলা হয়। পুলিশ ওই গ্রুপের সাত জনকে গ্রেফতারও করে। প্রথমে পুলিশ মনে করেছিল, স্ট্যাচুতে উঠে পড়া মহিলাও ওই গোষ্ঠীরই সদস্য। কিন্তু পরে ‘রাইজ অ্যান্ড রেজিস্ট’-এর টুইটার হ্যান্ডলে জানিয়ে দেওয়া হয়, ওই মহিলা তাঁদের গ্রুপের সদস্য নন। ফলে ওই মহিলা ব্যক্তিগত ভাবে প্রতিবাদ করেছেন, নাকি অন্য কোনও গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement