প্রতীকী ছবি।
সন্ত্রাসবাদীদের আর্থিক মদত আটকাতে গঠিত আন্তর্জাতিক সংগঠন ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স বা এফএটিএফ-এর ধূসর তালিকা থেকে পাকিস্তান এ বার বেরিয়ে আসতে পারবে কি না, তা স্পষ্ট হতে চলেছে ১৮ অক্টোবর, মঙ্গলবার। এ দিন থেকে প্যারিসে শুরু এফএটিএফ-এর বৈঠক, চলবে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত। এই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এই বিষয়ে।
তবে, ধূসর তালিকা থেকে পাকিস্তান সরে গেলে তা ভারত ও আমেরিকার অস্বস্তি বাড়াবে। সম্প্রতি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র আছে। দেশটি সুসংবদ্ধ নয়। পরমাণু অস্ত্র জঙ্গিদের হাতে পড়তেই পারে।’’
উদ্বেগে রয়েছে ভারতও। কাশ্মীর উপত্যকায় জঙ্গি হামলার পিছনে পাকিস্তানের হাত রয়েছে, দীর্ঘ দিন এই অভিযোগ ভারতের। পাশাপাশি অভিযোগ রয়েছে মাদক পাচারেরও। যদিও পাকিস্তান বরাবর সব অভিযোগই অস্বীকার করে এসেছে, তা-ও বিভিন্ন হামলার ঘটনায় পাক যোগের কথা একেবারেই উড়িয়ে দেয় না ভারত। এখন কেন্দ্রের আশঙ্কা, যদি নিয়ন্ত্রণ তালিকা থেকে সরে যায় পাকিস্তান, তবে মাদক পাচার ও জঙ্গি হানা আরও বাড়বে। পাশাপাশি যুক্ত হবে বিদেশি শক্তির সাহায্যও। পাকিস্তান প্রশাসনের অবশ্য দাবি, তারা আর্থিক ভাবে কোনও মদত দেয় না সন্ত্রাসবাদীদের। ধূসর তালিকায় এত দিন থাকার জন্য বিশ্বব্যাঙ্ক, আইএমএফ, এডিবি-র মতো সংস্থাগুলি থেকে আর্থিক সাহায্য পেতে সমস্যা হচ্ছে তাদের। ফলে প্রতিহত হচ্ছে দেশের উন্নয়ন।
২০১৮-র জুন থেকে এফটিএফের ধূসর তালিকায় রয়েছে পাকিস্তান। অবৈধ আর্থিক লেনদেন, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদীদের অর্থসাহায্য রুখতে একটি দেশের আইন ও বিচারব্যবস্থা, অর্থনৈতিক অবস্থা, তদন্ত ও নিয়ন্ত্রণ মূলক পদক্ষেপ যদি যথাযথ না হয়, তা হলেই সেই দেশটিকে বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির জন্য বিপজ্জনক বলে ধরা হয়। ধূসর তালিকাভুক্ত করার পরে সন্ত্রাসবাদীদের আর্থিক মদত বা অবৈধ লেনদেন রুখতে পাকিস্তানের জন্য ৩৪ দফা কর্মসূচি নির্ধারণ করেছিল এফএটিএফ। ২০২২ সালের জুনে এফএটিএফ-এর বৈঠকের পরে সংস্থাটি প্রাথমিক ভাবে জানায়, পাকিস্তান এই কর্মসূচির অনেকগুলি রূপায়ণ করেছে। এর পরে ২৯ অগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর এফএটিএফ-এর ১৫ সদস্যের একটি দল পাকিস্তান সফর করে। অর্থনৈতিক কার্যকলাপ থেকে বিচারব্যবস্থা সমস্তটাই খুঁটিয়ে দেখেন ওই দলের সদস্যেরা। তৈরি করা হয় রিপোর্ট। এই রিপোর্টের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে প্যারিসের বৈঠকে।