ছবি: পিটিআই।
চিনের উহানের সেই বিতর্কিত মাংসের বাজারে আজ পা রাখল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র তদন্তকারী দল। এই বাজার থেকেই প্রথম করোনা-সংক্রমণ ঘটেছিল বলে সন্দেহ বিশেষজ্ঞদের একাংশের। চিন নিজেও এক সময় তেমনটাই বলেছিল। পরে অবশ্য তারা উহানকেই করোনার উৎস হিসেবে মানতে অস্বীকার করে। দাবি করে, চিনে প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়লেও ভাইরাসটির উৎস অন্য কোনও দেশ।
করোনাভাইরাসের উৎসের সন্ধানে চিনে গিয়ে তদন্ত করে দেখার আবেদন জানিয়েছিল হু। বহু টালবাহানার পরে সম্প্রতি অনুমতি দিয়েছে চিন। তদন্ত করতে আপাতত চিনে রয়েছে দলটি। আজ তারা উহানের ‘হুনান সিফুড মার্কেট’ এবং অন্য একটি পাইকারি বাজারে যায়। গত বছর জানুয়ারি মাসে সংক্রমণ ধরা পরার পর থেকে বন্ধ রয়েছে হুনানের বাজারটি। আজ দু’টি বাজার চত্বর ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রেখেছিলেন নিরাপত্তা রক্ষীরা। শুধু হু-র দলটিকে ঢুকতে দেওয়া হয়। সাংবাদিকদেরও প্রবেশে অনুমতি দেওয়া হয়নি। বাজারের বাইরে অপেক্ষায় ছিলেন তাঁরা।
তদন্তকারী দল বাইরে বেরোতেই ঘিরে ধরেন সাংবাদিকরা। কিন্তু কোনও উত্তর না-দিয়েই গাড়িতে উঠে পড়েন বিশেষজ্ঞেরা, কাচ তুলে দেন। দলের এক সদস্য শুধু ‘থাম্বস আপ’ দেখান।
বিশ্বে করোনা
মৃত - ২২,৩৩,৩৯১
আক্রান্ত - ১০,৩৩,৩০,১৩১
সুস্থ - ৭,৪৯,৩৮,৫০১
প্রকাশ্যে কিছু না বললেও ঘটনার এক বছর বাদে ওই বাজার থেকে আদৌ কোনও তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান বিজ্ঞানীরা। ক্ষীণ আশাই দেখছেন তাঁরা। হু-র দলের সদস্য পিটার ডাসজ্যাকের মতে অবশ্য ভাইরাস সম্পর্কে জানার জন্য এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘‘খুব দরকারি ছিল এই জায়গাটায় যাওয়া।’’
হু-এর উহানে গিয়ে তদন্ত করা চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যমে বিতর্ক চলছেই। চিনের সরকারি মিডিয়া ‘গ্লোবাল টাইমস’ একটি রিপোর্টে দাবি করেছে, যথেষ্ট তদন্ত করা হয়েছে আগেই। হুনান বাজার কোনও ভাবেই ভাইরাসের এপিসেন্টার নয়। সম্ভবত কোল্ড-চেন-এ আসা খাদ্যদ্রব্যের মধ্যে দিয়ে ভাইরাসটি উহানের বাজারে এসেছিল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আগেই জানিয়েছে, ভবিষ্যতে আরও অতিমারি আসতে পারে। তা আটকাতে এই তদন্ত খুব জুরুরি। কিন্তু আপাতত করোনা অতিমারি নিয়ে নাজেহাল বিভিন্ন দেশ। বিশ্বে সংক্রমণ ১০ কোটি ৩২ লক্ষ ছাড়িয়েছে। মৃত্যু ২২ লক্ষ ৩১ হাজার। আমেরিকা শীর্ষে রয়েছে। সাড়ে ৪ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এ পর্যন্ত। ২ কোটি ৬৬ লক্ষ আক্রান্ত। গত এক মাসে মিশিগানের অ্যাড্রিয়ানের মাদারহাউস ক্যাম্পাসে ৯ জন সন্ন্যাসিনী মারা গিয়েছেন কোভিডে। ২০ ডিসেম্বরের আগেও কোনও সংক্রমণের খবর ছিল না সেখানে। আমেরিকায় এ পর্যন্ত ২ কোটি ৯৫ লক্ষ টিকাকরণ হয়েছে। গোটা দেশে ৪ কোটি ৯৯ লক্ষ ডোজ় পৌঁছেছে। অর্থাৎ সরকারের ঘরে পৌঁছনো টিকার ৫০ শতাংশ দেওয়া হয়েছে।
ইউরোপে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ব্রিটেনে (১ লক্ষের বেশি)। এ অবস্থায় ব্রিটেনে ভ্যাকসিন পৌঁছলেও ইউরোপের অন্য দেশগুলোয় যথেষ্ট প্রতিষেধক আসছে না বলে অভিযোগ তুলেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। জবাবে তাদের ব্লকের ভিতরে তৈরি হওয়া টিকা বাইরে রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে ইইউ। এ ক্ষেত্রে ভুগতে হবে ব্রিটেনকেও। কারণ তারা এখন ইইউ সদস্য নয়। প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার এই ঘটনার নিন্দা করে বলেন, ‘‘খুব বোকা বোকা কাজ হচ্ছে।’’