ক্ষতিগ্রস্থ ‘ইন্ডিয়া প্যালেস’-র সামনে দাড়িয়ে মালিক বলজিৎ সিংহ।—ছবি সংগৃহীত।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক শিখ-মার্কিনের রেস্তরাঁয় ব্যাপক ভাঙচুর চালাল এক দল দুষ্কৃতী। আমেরিকার নিউ মেক্সিকো প্রদেশের সান্টা ফে এলাকার ঘটনা। যাওয়ার আগে দুষ্কৃতীরা দেওয়াল ভরে লিখে দিয়ে গেল, ‘শ্বেতাঙ্গশক্তি’, ‘চলে যাও এখান থেকে...’, এমনই সব বিদ্বেষমূলক কথা।
ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে স্থানীয় পুলিশ ও এফবিআই। জানা গিয়েছে, ‘ইন্ডিয়া প্যালেস’ নামে ওই রেস্তরাঁটির আনুমানিক ১ লক্ষ ডলার ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় একটি শিখ-মার্কিন সংগঠনের পক্ষ থেকে এই হামলার নিন্দা করে জানানো হয়েছে, এ ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া হবে না। সমস্ত চেয়ার-টেবল ভেঙে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। মেঝেতে কাচের টুকরো ছড়িয়ে, ওয়াইন র্যাক ফাঁকা, চুরি গিয়েছে কম্পিউটার। রেস্তরাঁর রান্নাঘরটি আর ব্যবহারযোগ্য নেই। খাবার গরম করার যন্ত্র থেকে প্লেট, আস্ত নেই কিছুই। রেস্তরাঁ মালিক বলজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘চোখের সামনেই সব ঘটল। রান্নাঘরে ঢুকে আমি চেঁচিয়ে যাচ্ছি, কী করছ, থামো...।’’ বলজিৎ জানান, ‘শ্বেতাঙ্গশক্তি’, ‘ট্রাম্প২০২০’, ‘চলে যাও এখান থেকে’— এ ধরনের, এর থেকেও বেশি আপত্তিকর কথা স্প্রে-পেন্ট করে লিখে দিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। বেশির ভাগই হিংসা ও বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য।
আরও পড়ুন: নেপালের জমি দখল করে চিনের রাস্তা, ঘোরানো হচ্ছে নদীর গতিপথও
রেস্তরাঁ থেকে সামান্য দূরে থাকেন সিমরান সিংহ নামে এক শিখ মার্কিন বাসিন্দা। জানালেন, সান্টা ফে ভীষণই শান্তিপূর্ণ এলাকা। ষাটের দশক থেকে এখানে শিখ সম্প্রদায়ভুক্ত লোকের বসবাস। সবাই মিলেমিশে থাকেন। সম্প্রতি কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার ঘটনা ও ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে উত্তেজনা ছড়াতে থাকে এই এলাকায়। সিমরানের কথায়, ‘‘যা-ই ঘটুক না কেন, আমরা একই ভাবে ভালবাসা ও সহানুভূতি দিয়ে সকলের পাশে থাকব।’’ তবে শিখ সংগঠনটির পক্ষ থেকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, ইদানীং কালে বিদ্বেষ, ঘৃণা ও তা থেকে হামলার ঘটনা নজিরবিহীন ভাবে বেড়ে গিয়েছে আমেরিকায়। এপ্রিল মাসে কলোরাডোর লেকউড-এ লখবন্ত সিংহ নামে এক ব্যক্তির উপরে হামলা চালিয়েছিল এরিক ব্রিম্যান নামে এক যুবক। লখবন্তকেও ‘এ দেশ ছেড়ে চলে যাও...’ বলে মারধর করা হয়েছিল। কিন্তু এরিকের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক হামলার অভিযোগ পর্যন্ত আনেনি মার্কিন পুলিশ।