সাংবাদিকের হাত থেকে মাইক কেড়ে নিতে বলেন ট্রাম্প। ছবি: এপি।
প্রেসিডেন্টকে অপ্রিয় প্রশ্ন করেছিলেন। তার জন্য হোয়াইট হাউসে ঢোকা বন্ধ হয়ে গেল মার্কিন সাংবাদিকের। সিএনএন-এ কর্মরত ওই সাংবাদিকের নাম জিম অ্যাকোস্টা। তাঁর বিরুদ্ধে হোয়াইট হাউস ইনটার্নের সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগ আনা হয়েছে। সেই অজুহাতে বাতিল করা হয়েছে তাঁর প্রেস পাস। যা দেখিয়ে হোয়াইট হাউেস ঢোকার অনুমতি পান সাংবাদিকরা। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত সেখানে ঢুকতে পারবেন না তিনি।
বিতর্কের সূত্রপাত বুধবার। মধ্যবর্তী নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিবৃতি দিতে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে তাঁর দিকে বেশ কিছু প্রশ্ন ছুড়ে দেন জিম অ্যাকোস্টা। যার মধ্যে ছিল শরণার্থী বিতর্ক এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ ও সেই সংক্রান্ত তদন্ত। প্রশ্ন শুনেই চটে যান ট্রাম্প। জিম অ্যাকোস্টার হাত থেকে মাইক কেড়ে নিতে নির্দেশ দেন।
নির্দেশ শুনে মাইক কেড়ে নিতে এগিয়ে আসেন হোয়াইট হাউসের ইনটার্ন এক তরুণী। মাইক কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কোনওরকমে প্রশ্ন শেষ করেন জিম। যার পর তাঁর হাতে থেকে মাইক কেড়ে নিয়ে চলে যায় ওই তরুণী।
নিজের টুইটার হ্যান্ডলে ভিডিয়োটি পোস্ট করেন জিম।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার ভূত তাড়া করছে ট্রাম্পকে, অ্যাটর্নি জেনারেলকে বরখাস্ত করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট
ওই ঘটনার পর ফের নাকি হোয়াইট হাউসে ঢুকতে যান জিম। তখন তাঁর পথ আটকান ট্রাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিক্রেট সার্ভিসের এক অফিসার। তাঁর প্রেস পাস কেড়ে নেওয়া হয়। নিজের টুইটার হ্যান্ডলে সেই ঘটনার ভিডিয়ো পোস্ট করেন জিম। তাতে লেখেন, ‘‘হোয়াইট হাউসে ঢোকার মুখে আমার প্রেস পাস নিয়ে নেন সিক্রেট সার্ভিসের এক অফিসার। আমি অবশ্য ওঁকে দোষ দিইনি। নিজের কাজটুকু করেছেন উনি।’’
যদিও তাঁর দাবি উড়িয়ে দেন হোয়াইট হাউস সচিব সারা স্যান্ডার্স। ওই মহিলা ইনটার্নের সঙ্গে জিম অভব্য আচরণ করেছেন। তাই তাঁর প্রেস পাস কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানান। জিমকে সমর্থন করার জন্য বাকি সাংবাদিকদেরও এক হাত নেন তিনি।
জিমের হাত থেকে মাইক কেড়ে নেওয়া চেষ্টা হোয়াইট হাউস ইনটার্নের।
তবে তাঁর দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন ঘটনার সময় হোয়াইট হাউসে হাজির বাকি সাংবাদিকরা। তাঁদের তরফে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করা হয়। যাতে ওই ইনটার্নের সঙ্গে কোনওরকম অশালীন আচরণ করতে দেখা যায়নি জিম অ্যাকোস্টাকে। তারপরই হোয়াইট হাউসের সমালোচনায় একজোট হয় সাংবাদিক মহল। তাঁদের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ আনেন। হোয়াইট হাউসে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করা ‘দ্য হোয়াইট হাউস করেসপন্ডেন্টস’ সংগঠনও জিমের প্রেস পাস বাতিল করার তীব্র সমালোচনা করে। অবিলম্বে তাঁকে তা ফিরিয়ে দিতে বলা হয়। তবে তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি ট্রাম্প সরকার।
আরও পড়ুন: নকল পায়েই এভারেস্ট শীর্ষে, অরুণিমাকে কুর্নিশ ব্রিটেনের বিশ্ববিদ্যালয়ের
সংবাদ মাধ্যম বিশেষ করে সিএনএন-এর বিরুদ্ধে ট্রাম্পের অবস্থান কারও অজানা নয়। তাঁর বিভিন্ন পদক্ষেপের সমালোচনা করায় একাধিকবার সিএনএন-কে তিরস্কার করেছেন তিনি। এমনকি তাদের লাইসেন্স কেড়ে নেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন একাধিকবার।