earthquake

মূল ভূমিকম্পের পরে তো বটেই, আগেও কেঁপে ওঠে মাটি! কী এই ‘আফটারশক’, ‘ফোরশকই’ বা কী?

তুরস্কে প্রথম কম্পনের পর একশোরও বেশি আফটারশক হয়েছে। প্রথম কম্পনের ১১ মিনিটে দ্বিতীয় কম্পন হয়। যার তীব্রতা ছিল ৬.৭। প্রথম কম্পনের ৯ ঘণ্টার মধ্যে তৃতীয় কম্পন হয়। তীব্রতা ছিল ৭.৫।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৪:৪৪
Share:

একাধিক বার কেঁপেছে তুরস্কের মাটি। যার মধ্যে ৩০টি আফটারশকের তীব্রতা ছিল ৪-এর বেশি। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

প্রথম কম্পনের পর ১০০ বারেরও বেশি কেঁপেছে তুরস্ক। যেটাকে ‘আফটারশক’ বলা হয়। রিখটার স্কেলে প্রথম বার কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৮। ভূবিজ্ঞানীদের মতে, সাধারণত কোনও বড় কম্পনের পর আরও বেশ কয়েক বার কম্পন হতে পারে। যে কম্পন অনেক সময় মূল কম্পনের তীব্রতা থেকেও বেশি হতে পারে।

Advertisement

তুরস্কে প্রথম কম্পনের কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে একশোরও বেশি আফটারশক হয়েছে। আমেরিকার ভূসর্বেক্ষণ বিভাগের মতে, প্রথম বার কম্পনের পর ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে এই অঞ্চলে একশোরও বেশি কম্পন হয়েছে। প্রথম কম্পনের ১১ মিনিটের মাথায় দ্বিতীয় কম্পন হয়। যার তীব্রতা ছিল ৬.৭। প্রথম কম্পনের ৯ ঘণ্টার মধ্যে তৃতীয় কম্পন হয়। যার তীব্রতা ছিল ৭.৫। তার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে চতুর্থ কম্পন হয়। যার তীব্রতা ছিল ৫.৯। এর পর একাধিক বার কেঁপেছে তুরস্কের মাটি। যার মধ্যে ৩০টি আফটারশকের তীব্রতা ছিল ৪-এর বেশি।

ভূবিজ্ঞানীদের মতে, কোনও বড় ভূমিকম্পের পর যে সব আফটারশক হয় সেগুলির স্থায়িত্ব কয়েক ঘণ্টা, এমনকি কয়েক দিনও হতে পারে। এই আফটারশক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। তুরস্কে ৭.৫ তীব্রতার যে আফটারশক হয়েছিল তার গভীরতা ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিমি গভীরে ছিল। যেখানে মূল ভূকম্পের উৎসস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৭.৯ কিলোমিটার গভীরে। ভূবিজ্ঞানীরা আরও জানাচ্ছেন, ‘মেনশক’ বা মূল কম্পনের পর আসে ‘আফটারশক’। একই জায়গায় একাধিক বার আফটারশক হয়। প্রকৃতি সব সময় সমতা বজায় রাখার চেষ্টা করে। ভূকম্পনের ফলে সেই ভারসাম্য প্রভাবিত হয়। তাই মূল কম্পনের পর টেকটনিক প্লেটগুলি যখন আবার নিজের অবস্থানে ফিরে আসার চেষ্টা করে তখনই আফটারশকের সৃষ্টি হয়।

Advertisement

আফটারশকের কথা আমরা অনেকেই জানি। কিন্তু ‘ফোরশক’ও রয়েছে। কী এই ফোরশক? কোনও জায়গায় বড় ধরনের ভূমিকম্প হওয়ার আগে এই ফোরশক আসে। তবে বড় ভূমিকম্প না আসা পর্যন্ত এই ফোরশককে চিহ্নিত করা যায় না।

ভূবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, তুরস্কের ভৌগোলিক অবস্থান এমনই যে, এখানে ভূমিকম্প হওয়াটা খুব একটা অস্বাভাবিক বিষয় নয়। তবে সাম্প্রতিক অতীতে এমন ভয়াবহ তীব্রতার ভূমিকম্পের কোনও রেকর্ড নেই কৃষ্ণসাগরের তীরবর্তী এই দেশে। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বার বার ভূমিকম্পের শিকার হতে হয় তুরস্ককে। তাঁদের মতে, তুরস্কের বেশির ভাগ অংশই অ্যানাটোলীয় প্লেটের উপর রয়েছে। এই প্লেটের দু’টি বড় চ্যুতি রেখা (মেজর ফল্ট লাইন) রয়েছে। যার মধ্যে উত্তর অ্যানাটোলীয় চ্যুতি রেখাটি দেশের পশ্চিম ভাগ থেকে পূর্ব ভাগ পর্যন্ত বিস্তৃত। অন্যটি হল, পূর্ব অ্যানাটোলীয় চ্যুতি। যেটি তুরস্কের পূর্ব ভাগে রয়েছে।

তুরস্কের ভূমিকম্পে এখনও পর্যন্ত ৮ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা কত সে বিষয়টি স্পষ্ট করতে পারেনি প্রশাসন। এখনও বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছে প্রশাসন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement