রাশিয়ার নয়া প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আন্দ্রেই বেলোসভ। ছবি: রয়টার্স।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদে নতুন মুখ নিয়ে এলেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ২০১২ সাল থেকে রুশ প্রতিরক্ষা দফতরের দায়িত্বে ছিলেন সের্গেই শোইগু। তাঁকে সরিয়ে আন্দ্রেই বেলোসভকে নয়া প্রতিরক্ষামন্ত্রী করা হল। রবিবার ক্রেমলিনের তরফে এই পরিবর্তনের কথা জানানো হয়েছে।
তবে প্রাক্তন হতে চলা শোইগুকেও বড় দায়িত্ব দিচ্ছেন পুতিন। তাঁকে রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রভাবশালী নিরাপত্তা পরিষদের সচিব করা হচ্ছে। এত দিন নিরাপত্তা পরিষদের সচিব পদে ছিলেন নিকোলাই পেট্রুশেভ। ক্রেমলিনের তরফে জানানো হয়েছে, শোইগু প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত শিল্পের দিকটিও দেখভাল করবেন। সে দিক থেকে দেখতে গেলে দীর্ঘ দিনের পুতিন-সঙ্গী শোইগুর পদের ধার এবং ভার কিছুই কমছে না।
রাশিয়ার প্রবীণ নেতা সের্গেই লাভরভকে অবশ্য দেশের বিদেশমন্ত্রী পদে রেখে দেওয়া হয়েছে। রাশিয়ার নয়া প্রতিরক্ষামন্ত্রী অবশ্য সামরিক ক্ষেত্রে তাঁর দক্ষতার তুলনায় দ্রুত অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে বেশি দক্ষ বলে জানা গিয়েছে। পুতিন হঠাৎ কেন এই রদবদল ঘটালেন, তা নিয়েও নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
অবশ্য এই বদলের ব্যাখ্যা দিয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্র পেশকভ জানিয়েছেন, আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে সাবেক সোভিয়েট ইউনিয়নের যে অবস্থা হয়েছিল, তেমন কিছুর দিকেই এগোচ্ছে রাশিয়া। রাষ্ট্রের মোট ব্যয়ের ৭.৪ শতাংশই বেরিয়ে যাচ্ছে কেবল আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং সামরিক ক্ষেত্রে। পেশকভ যা বলেন, তার নির্যাস এই দাঁড়ায় যে, টালমাটাল অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে ‘দেশের সামগ্রিক স্বার্থে’ পুতিন এমন এক জনকে খুঁজছিলেন, যিনি সরাসরি সামরিক ক্ষেত্রের মানুষ নন। কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্র এবং অর্থনীতি নিয়ে যথেষ্ট জ্ঞান রয়েছে। পেশকভের কথায়, “এমন এক জন যিনি যুদ্ধক্ষেত্রে জয়ী হওয়ার পাশাপাশি উদ্ভাবনী চিন্তারও অধিকারী হবেন।”
এই রদবদলের পর অনেকেই মনে করছেন, সামরিক ক্ষেত্রে ব্যয় কমাতে চলেছেন পুতিন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে পড়শি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে রাশিয়া। সম্প্রতি রাশিয়ার উপপ্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। তার পর পুতিনের প্রতিরক্ষা দফতরে এই রদবদলকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধকৌশলে রাশিয়া বড় কোনও বদল আনছে কি না, তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে।