সেক্সবট। প্রতীকী ছবি।
চাইলেই সে হাজির। মুখ থেকে কথা না খসতেই স্বর্গ-সুখে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে রাজি। ‘উঁহু’, ‘এখন নয়’ বা ‘ইচ্ছে নেই’-এর মতো বিভ্রান্তিকর টালবাহানা নেই। আবার হুকুম তামিল করার ‘জো-হুজুর’ ভাবও না। আদর করার পুতুল বা ‘সেক্সবট’ তার চোখের পাতার ওঠা-নামায়, মৃদু হাসি কিংবা ঘাড় বাঁকানো ভঙ্গিমায় দিব্যি মনের (আসলে কৃত্রিম মনন) কথা জানায়। হয়তো সে জন্যই একটি সমীক্ষার মতে ৪৮ শতাংশ পুরুষ তাঁদের মিলনেচ্ছা মেটাতে রক্ত মাংসের মানবীর বদলে যন্ত্রমানবীতে আস্থা রাখেন। এমনকি ৪৩ শতাংশ পুরুষ তাদের প্রেমে পড়তেও চান। তবে মানুষ ছেড়ে যন্ত্রে ভরসা রাখতে চাওয়া সেই প্রেমিক পুরুষদের সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মত, যন্ত্রমানবী তার মনিবের প্রেমে সঙ্গ দিতে পারে ঠিকই, আবার চরম মুহূর্তে মনিবকে চূড়ান্ত আঘাতও করতে পারে।
ছবি: টুইটার
দিন কয়েক আগেই সেক্সবট প্রস্তুতকারী এক সংস্থা তাদের নতুন পণ্যের বিজ্ঞাপনে দাবি করেছিল, তাদের পুতুল মনিবের হৃদয় স্পর্শ করবে। সেই বিজ্ঞাপন দেখে এক যন্ত্রমানবী বিশেষজ্ঞ বলেছেন, নির্মাতাদের এ সব কথা বলার আগে ভেবে দেখা উচিত, তারা কী বলছে। লন্ডনের কিংস কলেজের অধ্যাপক কেট ডেভলিন বলেছেন, ‘‘এই ধরনের পুতুল যার নিজে উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতাটুকুও নেই, তারা মানুষের মন জিতবে এটা দুরাশা। এরা বড়জোর মনিবের পছন্দ-অপছন্দের হিসেব রাখতে পারে। সেই তথ্য নিজের যান্ত্রিক মাথায় জমিয়ে রাখতে পারে। সুযোগ বিশেষে কাজেও লাগাতে পারে।’’ যদিও আর এক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, যন্ত্রমানবীর এই তথ্য সংগ্রহ করে রাখার প্রবণতা ভবিষ্যতে তার মনিবের জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে।
‘লাভ অ্যান্ড সেক্স উইথ রোবট’ বইয়ের লেখক চিকিৎসক ডেভিড লেভি মনে করেন, যে ভাবে কম্পিউটার বা মোবাইল ফোন হ্যাক করা যায়, সেই একই প্রক্রিয়ায় সেক্সবটের যান্ত্রিক মাথাকেও চাইলে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে মনিবের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার চরম মুহূর্তে তার হাতে উঠে আসতে পারে ছুরি। আদর করার পুতুল হয়ে উঠতে পারে মারণাস্ত্র।
কিছু দিন আগেই আদর করার পুতুলের সঙ্গে সঙ্গমের আগে তার অনুমতি চাওয়ার কথা বলেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, একই নিয়ম যন্ত্রমানবীর মনিবের জন্যও হওয়া উচিত। তবে যত দিন না তা হচ্ছে, তত দিন যন্ত্রপ্রেমীরা যন্ত্রের প্রেমে পড়ুন...। তবে ভেবে চিন্তে।