শিখ রাজনীতিক গুরমিত সিংহ। ঘটনার সময়, অন্টারিওয়। ফেসবুকে ভাইরাল ভিডিও থেকে নেওয়া ছবি।
এ বার জাতিবিদ্বেষের রোষের মুখে পড়তে হল কানাডার এক শিখ রাজনীতিককে। প্রকাশ্যে তাঁকে ‘মুসলিমদের শয্যাসঙ্গী’ বলে ভর্ৎসনা করলেন এক শ্বেতাঙ্গ মহিলা। করা হল কটূক্তি। বেশ কিছু ক্ষণ ধরে। কিন্তু তার পরেও যে ভাবে যথেষ্ট সংযম ও বিনয়ের পরিচয় দিয়েছেন অন্টারিওর ওই শিখ রাজনীতিক, তার ভিডিও ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই দেখা হয়েছে ৪ লক্ষ বার। শেয়ার হয়েছে এখনও পর্যন্ত ৩ হাজার।
ওই শিখ রাজনীতিকের নাম জগমিত সিংহ। নিউ ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এনডিপি) নামে একটি বাম-ঘেঁষা দল গড়েছেন তিনি। কানাডার তৃতীয় বৃহত্তম দল এখন এনডিপি।
আরও পড়ুন- নিজেদের নামের জন্যই মুষড়ে পড়লেন এই দম্পতি
আরও পড়ুন- ৪০ বছর ধরে মহাকাশে হাঁটছে এই দুই পথিক
ভিডিও’য় দেখা যাচ্ছে, গত বুধবার জগমিত যখন অন্টারিওর ব্রাম্পটনে তাঁর দলের প্রচারে একটি কর্মীসভায় তাঁর ভাষণ শুরু করতে যাচ্ছিলেন, সেই সময় ওই শ্বেতাঙ্গ মহিলা তাঁকে বাধা দেন। ৩৮ বছর বয়সী জগমিতের হাতে কৃপাণ, মাথায় পাগড়ি আর লম্বা দাড়ি দেখে ওই শ্বেতাঙ্গ মহিলা রেগেমেগে তাঁকে প্রকাশ্যে ভর্ৎসনা করে বলেন, ‘‘আমরা ভাল করেই জানি, তুমি তো মুসলিমদের শয্যাসঙ্গী। ওদের শরিয়ত আইনের সঙ্গে ঘর কর। তোমাকে আমি কিছুতেই এখানে বলতে দেব না।’’ ভাষণ দেওয়ার জন্য জগমিতের মঞ্চে ওঠার পথও রুখে দাঁড়ান ওই মহিলা। যিনি নিজেকে ‘জেনিফার’ বলে পরিচয় দিতে থাকেন। সেই সময় জগমিতের দলের মহিলা কর্মী, সমর্থকরা ওই মহিলাকে দূরে সরিয়ে দিতে গেলে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তিনি। চিৎকার করে বলতে থাকেন, তিনি পুলিশকে সব কিছু জানাবেন।
দেখুন সেই ঘটনার ভিডিও (সৌজন্যে: ব্রাম্পটন ফোকাস)
এর পর ওই মহিলাকে সরাসরি কিছু না বলে জনতার উদ্দেশে অত্যন্ত সংযত ভাষায় জগমিতকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আপনাদের আজ একটা কথা বলব। বাদামি চামড়ার মানুষ হওয়ার ফলে আর লম্বা দাড়ি ও হাতে কৃপাণ রাখি, মাথায় পাগড়ি পরি বলে বহু বার এমন অবস্থায় পড়তে হয়েছে আমাকে। আরও অনেক বাধার মতো এই বাধাও আমাদের সামলাতে হবে আগামী দিনে। কিন্তু ভালবাসা আর সাহস দিয়েই এই সব বাধা জয় করতে হবে।’’
জগমিতের ওই সংযত, বিনয়ী ভাষণের পর আরও কোণঠাসা হয়ে পড়েন ওই শ্বেতাঙ্গ মহিলা। প্রত্যেকেই ভূয়সী প্রশংসা করেন শিখ রাজনীতিকের।
জগমিতের সেই ভাষণের গোটাটাই ভিডিও করে একটি স্থানীয় দৈনিক ‘ব্রাম্পটন ফোকাস’। ফেসবুকে সেই ভিডিও পরে ভাইরাল হয়ে যায়।
(এই প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশের সময় জগমিত সিংহের নাম ভুলবশত গুরমিত সিংহ বলে লেখা হয়েছিল। পাঠকদের ধন্যবাদ এই গুরুতর ভুল ধরিয়ে দেওয়ার জন্য। এই অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির জন্য আমরা দুঃখিত।)