দুলাল ঘোষের ছেলে দ্রুনাঞ্জন বকছানাটিকে খাওয়াচ্ছে। ছবি ফেসবুকের সৌজন্যে।
বকও পোষ মানে!
একটি বক নির্ভয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে ঘরে। রান্নাঘরে সিঙ্ক বা খাবার টেবিলে বাটিতে রাখা পুঁটি মাছ খেয়ে নিচ্ছে| বাড়ির বড়-ছোট সকলের হাত থেকে মাছ খাচ্ছে সেটি। কোলে বসছে। ঘাড়ে উঠছে। খেলা করছে তাদের সঙ্গে। মাছ খাওয়া শেষে উড়ে যাচ্ছে গাছে।
বাংলাদেশের ছোট শহর আখাউড়া। সেখানে প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা কামাখ্যারঞ্জন ঘোষের বাড়ির এই ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বাড়িটির চারটি আম আর দু’টি জামগাছে প্রায় চল্লিশ জোড়া বকের বাসা। নিরাপদ বলেই এই পাখিরা প্রায় দেড়যুগ ধরে এই বাড়ির গাছে বাসা বানায়।
সাংবাদিক দুলাল ঘোষ জানাচ্ছেন, গত ২৭ জুন বাড়ির উঠোনে বকছানাটি ছটফট করছিল। ছেলে দ্রুনাঞ্জন ও ভাইপো প্রতীক্ষা তুলে এনে ফ্রিজের বরফ দিয়ে তার সেবা করে। পরে গাছে তুলে দিতে চাইছিল। কিন্তু পাখিটির সেই শক্তি ছিল না। তার পর থেকেই বাড়ির একটি ঘরে তাকে আশ্রয় দেওয়া হয়। এখন কোভিডের মধ্যে ঝুঁকি নিয়েই সেটির জন্য মাছ এনে দেওয়া হচ্ছে। বকটি প্রথম দিকে নিজে খেতে পারত না। খাইয়ে দেওয়া হত। সপ্তাহখানেক পর থেকে নিজেই খেতে শুরু করে এবং বাড়ির মধ্যে ঘরেবাইরে ঘুরে বেড়াতে শুরু করে। এর পর গাছে তুলে দেওয়া হলেও বকটি ঘরে ফিরে আসত। এক দিন বকটি উড়ে গাছে ওঠে। সেই দিনটি ছিল ওই বাড়িতে উৎসব। তবে সকাল-দুপুর-বিকেলে, নিয়ম করে বকটি ঘরে ফিরে আসতে থাকে। পুঁটি মাছ খেয়ে উড়ে যায়।
দুলাল বাবু জানান, দিন দুয়েক আগে বকটি সঙ্গী পেয়েছে। বাড়ির অদুরে তিতাস নদী আর নদী এলাকার বিলে যায়। তবে দিনে কোনও এক সময় আসে। ফ্রিজে থাকা পুঁটি জলে ভিজিয়ে উপযোগী করে দিলে খেয়ে উড়ে যায়। বকটি উড়তে শিখলেও এক মাসের আশ্রয়, ঘরটিকে ভুলছে না। তাঁর কথায়, “পাখিরা অকৃতজ্ঞ না। সঙ্গী পেয়ে ভুলে যায়নি। এক-দু'দিন পর হলেও দেখা করতে আসে। ভালবাসার মূল্য জানে ছোট্ট পাখিটিও।”