Climate Change

তাপমাত্রা বাড়ছে, অভাব দেখা দেবে খাবার, জলেরও, জলবায়ু রিপোর্টে দাবি বিজ্ঞানীদের

জলবায়ু পরিবর্তনের কুফল নিয়ে বিজ্ঞানী-পরিবেশবিদদের নানাবিধ পূর্বাভাস এবং সতর্কীকরণ নতুন নয়। তবে এ বার জলবায়ু সংক্রান্ত একটি গবেষণা রিপোর্টে বিজ্ঞানীদের দাবি, রীতিমতো আশঙ্কার।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লন্ডন শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২৩ ০৫:৪৭
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

উন্নয়নের নামে নিরবচ্ছিন্ন প্রকৃতি ধ্বংস চলতে থাকলে পৃথিবীতে জীবনের অস্তিত্বই সঙ্কটে পড়বে। প্রাণের বাসযোগ্য থাকবে না এই গ্রহ। বিজ্ঞানীদের কথায়, ‘‘আমরা আমাদের গ্রহকে মারাত্মক অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিচ্ছি।’’

Advertisement

জলবায়ু পরিবর্তনের কুফল নিয়ে বিজ্ঞানী-পরিবেশবিদদের নানাবিধ পূর্বাভাস এবং সতর্কীকরণ নতুন নয়। তবে এ বার জলবায়ু সংক্রান্ত একটি গবেষণা রিপোর্টে বিজ্ঞানীদের দাবি, রীতিমতো আশঙ্কার। ‘বায়োসায়েন্স’ নামে এক বিজ্ঞান পত্রিকায় গত কাল একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে।

আমেরিকা, নেদারল্যান্ডস, ব্রিটেন, ব্রাজ়িল, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি এবং চিন— এই সাত দেশের মোট ১২ জন বিজ্ঞানী মিলে ‘বায়োসায়েন্স’ পত্রিকায় একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন। যার শিরোনাম ‘দ্য ২০২৩ স্টেট অব দ্য ক্লাইমেট রিপোর্ট: এন্টারিং আনচার্টেড টেরিটরি’। চলতি বছরের জলবায়ু সংক্রান্ত বিশেষ কিছু পরিবর্তনের উল্লেখ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। সারা বিশ্বে অস্বাভাবিক তাপপ্রবাহ থেকে শুরু করে মহাসাগরের রেকর্ড তাপমাত্রা বৃদ্ধি বা অতিবৃষ্টিতে ভয়াবহ বন্যা ও ধসের উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে। এর পাশাপাশি দক্ষিণ মেরু প্রদেশের চারপাশে থাকা সমুদ্রে ভাসমান বরফের স্তর হ্রাসে কথাও রিপোর্টে বিশেষ ভাবে উল্লেখ করেছেন ওই বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত চলতি বছরে মোট ৩৮ দিন পৃথিবীর গড় উষ্ণতা শিল্প বিপ্লবের আগের সময়ের থেকে দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। বস্তুত বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, চলতি বছরেই গোটা বিশ্বের উষ্ণতা সব রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে। আমেরিকার ‘ন্যাশনাল ওশানিক অ্যান্ড অ্যাটমস্ফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ এবং ইউরোপের ‘কোপারনিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস’-ও তাই চলতি মাসের গোড়াতেই ইঙ্গিত করেছে যে, এ বছরটাই বিশ্বের উষ্ণতম বছর হতে চলেছে। এ ছাড়াও ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রাও গত এক লক্ষ বছরের মধ্যে এ বছরেই রেকর্ড ছুঁয়েছে।

Advertisement

বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, জলবায়ুর এই চরম পরিবর্তনের একমাত্র কারণ হল মানুষ ও তাদের দ্বারা প্রকৃতির এই ধ্বংসলীলা। মানবজাতির কার্যকলাপ ছাড়াও অবশ্য এই ১২ জন বিজ্ঞানী কিছু জটিল বিষয়ের কথা গবেষণায় উল্লেখ করেছেন। যার মধ্যে জলস্তরের নীচে থাকা আগ্নেয়গিরির বাষ্পের প্রভাব, আফ্রিকার ধুলো এবং এল নিনো-র কথাও জানিয়েছেন তাঁরা। বিজ্ঞানীরা এ-ও জানাচ্ছেন, বিশ্ব উষ্ণায়নের এই প্রভাব কমাতে মানবজাতির প্রচেষ্টা আদৌ চোখে পড়ার মতো নয়। অবশ্য তাঁরা এটাও বলছেন যে, পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি অর্থাৎ বায়ু এবং সৌরশক্তি ব্যবহার গত দু’বছরের তুলনায় এ বছর বেড়েছে প্রায় ১৭ শতাংশ। যদিও এই শতাংশটাই জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের তুলনায় প্রায় ১৫ গুণ কম বলেও দাবি বিজ্ঞানীদের। ওরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটি কলেজ অব ফরেস্ট্রি-র বিজ্ঞানী তথা এই গবেষক দলের অন্যতম সদস্য উইলিয়াম রিপলের কথায়, ‘‘পৃথিবীতে আমাদের জীবন এখন কার্যত অবরুদ্ধ।’’ তাঁর ব্যাখ্যা, প্রাকৃতিক এবং আর্থসামাজিক ধ্বংসের মুখে মানবজাতি এখন দাঁড়িয়ে রয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে এই অতিরিক্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং তাপপ্রবাহের জেরে খাদ্য এবং পরিস্রুত জলের অভাব দেখা দেবে পৃথিবীতে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এর থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হল জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানো। এবং তার জায়গায় পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তির প্রয়োগ বাড়ানো।


আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement