দু’দিনে ৪৬টি আফগান বিমান নামিয়েছে উজবেকিস্তান।
আফগান বিমানের ‘ভেঙে পড়া’ নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছিল আগেই। একটি নয়, দু’টি নয়, এ বার দু’দিনে কাবুল থেকে আসা ৪৬টি বিমান জোর করে নামানোর কথা স্বীকার করল উজবেকিস্তান। তাদের দাবি, বেআইনি ভাবে তাদের আকাশসীমায় ঢুকে পড়েছিল বিমানগুলি। তাই সেগুলি নামাতে বাধ্য হয়েছে তারা।
রবিবার তালিবান কাবুলের দখল নেওয়ার পর থেকেই দলে দলে দেশ ছাড়ছেন আফগান মানুষ। এই দেশত্যাগীদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আশরফ গনি ঘনিষ্ঠ সেনাকর্তা এবং নিরাপত্তা আধিকারিকরাও। বিমানে চেপে আশেপাশের দেশগুলিতে আশ্রয়ের খোঁজ করছেন তাঁরা।
এমন পরিস্থিতিতে সোমবার সকালেই উজবেকিস্তানে আফগান সেনার একটি বিমান ভেঙে পড়ার কথা সামনে আসে। জানা যায় রবিবার গভীর রাতে বিমানটি সেখানে ভেঙে পড়ে। শুরুতে এ নিয়ে কোনও মন্তব্যই করেনি উজবেকিস্তান সরকার। উপগ্রহ থেকে তোলা ছবি ও ভিডিয়োর মাধ্যমে বিষয়টি তদারকি করে দেখা হচ্ছে বলে জানায় তারা।
কিন্তু দেশের সরকারি আধিকারিকদের মন্তব্যেই অসঙ্গতি ধরা পড়ে। প্রথমে রাশিয়া জানায়, উজবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সঙ্গে কথা হয়েছে তাদের। বিমানটি নামানো হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। এর পর উজবেক সরকার বিবৃতি প্রকাশ করে জানায়, রাস্তা দেখিয়ে বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়ার সময় বায়ুসেনার একটি বিমানের সঙ্গে সংঘর্ষে আফগান বিমানটি ভেঙে পড়ে। পরে যদিও সেই মন্তব্য প্রত্যাহার করে নেয় উজবেক সরকার।
এর পরই মঙ্গলবার জোর করে বিমান নামানোর কথা মেনে নেয় তারা। জানায়, রবিবার থেকে মোট ২২টি আফগান যুদ্ধবিমান এবং ২৪টি সেনা হেলিকপ্টার বেআইনি ভাবে তাদের আকাশসীমায় প্রবেশ করে। ওই ৪৬টি বিমানে পূর্বতন গনি সরকারের ৫৮৫ জন আফগান সেনাকর্তা এবং আধিকারিক ছিলেন। তাই সেগুলি নামানো হয়। রবিবার রাতে ‘ভেঙে পড়া’ বিমানটিও বেআইনি ভাবে আকাশসীমা লঙ্ঘন করায় নামানো হয় বলে জানিয়েছে তারা। ওই দুই বিমানের পাইলট হাসপাতালে ভর্তি। বাকিদের কী অবস্থা, তা খোলসা করেনি উজবেক সরকার।
পড়শি দেশে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে চলে আসা বিক্ষোভের আঁচ উজবেকিস্তানকেও বছরের পর বছর বয়ে বেড়াতে হয়েছে। তাই রবিবার তালিবান কাবুল দখল করার পর থেকেই অনেক বেশি সাবধানী তারা। এর আগে, বেআইনি ভাবে সীমান্ত পেরিয়ে চিকিৎসা সহায়তা চাইতে আসা ৮৪ জন আফগান সেনাকে গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছিল উজবেকিস্তান।