Donald Trump

‘ঠান্ডাযুদ্ধের কিনারার দিকে ঠেলে দিচ্ছে আমেরিকা’, বিস্ফোরক চিনের বিদেশমন্ত্রী

চিনের বিদেশমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘নভেল করোনাভাইরাসের ধ্বংসলীলা ছাড়াও আমেরিকা থেকে একটি রাজনৈতিক ভাইরাসও ছড়িয়ে পড়ছে।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেজিং শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২০ ১৬:৪২
Share:

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। —ফাইল চিত্র

চিনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ককে ঠান্ডা যুদ্ধের কিনারার দিকে ঠেলে দিচ্ছে আমেরিকা। এ বার চাঞ্চল্যকর এই অভিযোগ করলেন চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। করোনা সংক্রমণ, হংকং ইস্যু-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের পারদ ক্রমশই চড়তে শুরু করেছে। সে দিকে নজর রেখেই শনিবার এই মন্তব্য করেছেন চিনের বিদেশমন্ত্রী।

গোটা দুনিয়ায় করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই বেজিংয়ের প্রতি লাগাতার উষ্মা প্রকাশ করে চলেছে ওয়াশিংটন। তা স্মরণে রেখেই ওই দিন চিনের বিদেশমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমাদের নজরে এসেছে যে, আমেরিকায় কিছু রাজনৈতিক শক্তি চিন ও মার্কিন কূটনৈতিক সম্পর্ককে সামনে খাড়া রেখে দু'টি দেশকে ঠান্ডা যুদ্ধের কিনারার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’’ তবে আমেরিকার ‘রাজনৈতিক শক্তি’ বলতে ওয়াং কোন শক্তির কথা বোঝাচ্ছেন, তা তিনি স্পষ্ট করেননি।

করোনাভাইরাস নিয়ে প্রায় রোজই চিনকে কড়া ভাষায় বিঁধছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চিনই করোনার সৃষ্টিকর্তা বলে অভিযোগ পর্যন্ত করেছেন তিনি। বেজিংয়ের প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-এর বিরুদ্ধেও। সেই ঘটনাক্রমের দিকে দৃষ্টি রেখেই পাল্টা আঘাত করেছে বেজিং। হুঁশিয়ারির সুরেই ওয়াংয়ের মন্তব্য, ‘‘নভেল করোনাভাইরাসের ধ্বংসলীলা ছাড়াও আমেরিকা থেকে একটি রাজনৈতিক ভাইরাসও ছড়িয়ে পড়ছে।’’ তাঁর মতে, ‘‘ওই রাজনৈতিক ভাইরাসটি চিনকে আক্রমণ করা ও সমালোচনা করার প্রতিটি সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে। কিছু রাজনৈতিক নেতা চিনকে নিশানা করেই সত্যকে পুরোপুরি উপেক্ষা করছেন ও মিথ্যাকে সাজাচ্ছেন। তাঁরা ষড়যন্ত্রও করছেন।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: উহানের ল্যাবে করোনাভাইরাস ছিল, কিন্তু কোভিড-১৯-এর সঙ্গে তার মিল নেই, দাবি চিনা গবেষকের

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময় থেকে ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়ার আগে পর্যন্ত সময়টিকে কোল্ড ওয়ার বা ঠান্ডা যুদ্ধের সময় বলে চিহ্নিত করা হয়। আমেরিকা ও সোভিয়ত ইউনিয়ন-- এই দু'টি পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার নানা ছবি সে সময় দেখেছিল গোটা বিশ্ব। আচমকা বেজিং সেই প্রসঙ্গ টেনে আনল কেন? চলতি বছরের জানুয়ারিতে চিনের সঙ্গে বিরাট বাণিজ্য চুক্তি সই করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সে সময় মুক্তকণ্ঠে চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের প্রশংসাও করেন তিনি। কিন্তু চিনের উহান থেকে বিশ্বে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই চিনের সম্পর্কে তিনি মত বদলাতে থাকেন। প্রায় রোজই নিয়ম করে চিনের সমালোচনা শুরু করেন ট্রাম্প। এমনকি, চিনের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করে দেওয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি। আর তার ফলে গত কয়েক মাসে বেজিং-ওয়াশিংটন সম্পর্ক এখন তলানিতে এসে ঠেকেছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: ছবি এঁকে এই ইঁদুরের আয় প্রায় লাখ টাকা!

ট্রাম্পের সেই উষ্মার ধার বাড়িয়েছে হংকং ইস্যু। হংকংয়ে নিজেদের লাগাম টেনে ধরতে পার্লামেন্টে নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইনের একটি খসড়া প্রস্তাব পেশ করেছে চিন। চিন-বিরোধী বিক্ষোভে গত বছর উত্তাল হয়ে ওঠে হংকং। সার্বভৌমত্ব ও স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে সে সময় পথে নেমেছিলেন সেখানকার বাসিন্দারা। তাই অনেকেরই অভিযোগ, ওই আইন পাশ করিয়ে আসলে হংকংয়ের বাসিন্দাদের কণ্ঠ স্তব্ধ করে দিতে চাইছে বেজিং। এ সব ঘটনাকে সামনে রেখেই বেজিংয়ের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি অনেকটাই বদলেছে ওয়াশিংটন। সেইসঙ্গে চিন-আমেরিকা সংঘাতও নতুন মাত্রা পেয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement