ফাইল চিত্র।
প্রাক্তন আফগান সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিচার ছাড়াই পর পর হত্যা করছে তালিবান। আবার স্রেফ গুম হয়ে যাচ্ছেন অনেকে! প্রায় প্রতিদিনই আফগানিস্তানের মানবাধিকার সংগঠগুলির মাধ্যমে বিশ্বের কানে এসে পৌঁছচ্ছে এই ঘটনাগুলি। এই তালিবানি অত্যাচারের বিরুদ্ধে শনিবার সুর চড়াল আমেরিকা। তবে শুধু আমেরিকা নয়, ওয়াশিংটনের পাশে দাঁড়িয়ে সরব একাধিক পশ্চিমি দেশ এবং তাদের সহযোগীরাও। দাবি একটাই, দ্রুত তদন্ত হোক এই ‘হত্যালীলার’।
আমেরিকার নেতৃত্বে এ দিন একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। আমেরিকার বিদেশ দফতরের প্রকাশিত ওই বিবৃতির বয়ানে বলে হয়েছে, ‘‘মানবাধিকার পর্যবেক্ষক এবং অন্যান্যদের প্রকাশিত রিপোর্টে যে হারে প্রাক্তন সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিচার ছাড়া হত্যা এবং জলজ্যান্ত মানুষগুলিকে গুম করে দেওয়ার মতো ঘটনার বিবরণ দেওয়া হয়েছে তাতে আমরা গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন।’’ সঙ্গে ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘‘তালিবান প্রাক্তন সরকারের কর্মচারীদের ‘ক্ষমা দানের’ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিল, কিন্তু বাস্তব চিত্র উল্টে কথাই বলছে। যা মানবাধিকারের বিরুদ্ধে চরম অবমাননাকর তো বটেই তালিবানের নিজেদের ঘোষণারও পরিপন্থী।’’ এই প্রেক্ষিতে তালিবানের কাছে তাদের ঘোষিত ‘ক্ষমা দানের’ প্রক্রিয়া দেশ জুড়ে এবং সব পদমর্যাদার আধিকারিকদের জন্য লাগু করার দাবি জানানো হয়েছে আমেরিকার তরফে।
উল্লেখ্য, এ সপ্তাহের গোড়াতেই আফগানিস্তানের মানবাধিকার পর্যবেক্ষকদের তরফে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। যেই তথ্য অনুযায়ী, অগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত প্রাক্তন সরকারের অধীস্থ ‘আফগান ন্যাশনাল সিকিয়োরিটি ফোর্সেস (এএনএসএফ)-এর যে ৪৭ জন সদস্য, অন্য বাহিনীর আধিকারিক, পুলিশ এবং গোয়েন্দারা তালিবানের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন বা তাদের হাতে ধরা পড়েছিলেন তাঁদের বিচার ছাড়াই হত্যা করা হয়েছে বা গুম করে দিয়েছে তালিবান।
তালিবানি শাসনে এই চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন আটকানোর এই লড়াইয়ে আমেরিকার সঙ্গে সরব হয়েছে কানাডা, নিউজ়িল্যান্ড, রোমানিয়া, ইউক্রেন, জাপান, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নও। তাদের সকলেরই দাবি, যে ঘটনাগুলি সামনে এসেছে তার পুঙ্খানুপুঙ্খ এবং স্বচ্ছ তদন্ত হোক। দোষীদের সামনে আনা হোক। তবে শুধু এটুকু করলেই হবে না। এই উদাহরণ থেকে শিক্ষা নিয়ে যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে, তা-ও নিশ্চিত করতে হবে।