এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র। ফাইল চিত্র।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে উড়িয়ে রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার তোড়জোড় শুরু করে দিল ন্যাটোর সদস্য তুরস্ক। তাদের এই সিদ্ধান্তে বেজায় চটেছে আমেরিকা। হুঁশিয়ারি দিয়ে তারা জানিয়েছে, এই চুক্তি এখনই বন্ধ করুক তুরস্ক। না হলে খেসারত দিতে হবে। শুধু তাই নয়, এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানও তুরস্ককে বিক্রির সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে আমেরিকা।
যদিও মার্কিন এই হুঁশিয়ারিকে বিশেষ পাত্তা দিতে নারাজ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এর্দোয়ান। পাল্টা তিনি বলেন, নিজের দেশকে রক্ষা করা একটা সার্বভৌমিক অধিকার। আর দেশের নিরাপত্তার খাতিরেই রাশিয়ার সঙ্গে এই চুক্তি করেছেন তাঁরা।
রাশিয়ার সঙ্গে তুরস্কের এই চুক্তিতে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ন্যাটো। তাদের দাবি, এই চুক্তির মাধ্যমে রাশিয়াকে চরবৃত্তি করার সুযোগ করে দিচ্ছে তুরস্ক। যদিও এই যুক্তিকে খণ্ডন করে এর্দোয়ান জানিয়েছেন, এই চুক্তি কোনও ভাবেই ন্যাটোর উপর প্রভাব ফেলবে না। বরং তুরস্কের পাশাপাশি ন্যাটো-রও সামরিক ক্ষমতা আরও মজবুত হবে বলেই দাবি এর্দোয়ানের।
আরও পড়ুন: বাক্স-বদল! বই-খাতায় প্রথা ভাঙলেন নির্মলা
রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র না কেনার জন্য দীর্ঘ এক বছর ধরে তুরস্ককে চাপ দিয়ে আসছিল আমেরিকা। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা না মানায় এ বার দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও তিক্ত হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। শুধু তাই নয়, সিরিয়া নিয়ে দু’দেশের মধ্যে সামরিক বোঝাপড়ার উপরও ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
মার্কিন সেক্রেটারি অব স্টেট মাইক পম্পেও তুরস্ককে চরম হুঁশিয়ারি দিলেও, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কিন্তু এর্দোয়ানের প্রতি সহানুভূতিই জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে তুরস্কের এই সিদ্ধান্তের জন্য প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার শাসনকালকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন। ট্রাম্প বলেন, “ওবামা প্রশাসনের কাছ থেকে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র কিনতে চেয়েছিল তুরস্ক। কিন্তু তাদের সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করা হয় তখন। এটা একটা বড় ভুল। এর্দোয়ানের কোনও দোষ নেই।”
আরও পড়ুন: দলে দোলাচল, রাহুলের চোখ ফোনে
প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, যেখানে তাঁরই প্রশাসন তুরস্ককে হুঁশিয়ারি দিচ্ছে, সেই অবস্থানে দাঁড়িয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট কেন এর্দোয়ানের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করছেন? জি-২০ সম্মেলনেও তুরস্কের উপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ট্রাম্প। তা হলে কি অন্য কোনও কৌশল অবলম্বন করে তুরস্ককে চাপে ফেলার চিন্তাভাবনা করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট? যদিও এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি পেন্টাগন থেকে।
তবে এক বিবৃতি জারি করে পেন্টাগন জানিয়েছে, এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্রের সঙ্গে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কখনও খাপ খাবে না। তুরস্ককে এই দু’ধরনের সামরিক অস্ত্র ব্যবহারে কোনও ভাবেই অনুমতি দেওয়া হবে না। পাশাপাশি পেন্টাগন এটাও জানিয়েছে, তারা আশা করছে রাশিয়ার সঙ্গে এই চুক্তি বাতিল করবে তুরস্ক।