এনএসজিতে ভারতের অন্তর্ভুক্তির চেষ্টা আটকে দেওয়ার নিয়ে নাম না করে ফের চিনকে কড়া বার্তা দিল আমেরিকা। ‘দায়িত্বশীল’ হতে হবে চিনকে, বার্তা ওয়াশিংটনের। ভারতই এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের রাজনৈতিক ভারসাম্য অক্ষুণ্ণ রেখেছে বলে মন্তব্য করেছে আমেরিকা।
গত সপ্তাহেই দক্ষিণ কোরিয়ার সোলে শেষ হয়েছে পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠী বা এনএসজির প্লেনারি অধিবেশন। আমেরিকা-সহ অধিকাংশ সদস্য দেশ ভারতকে ওই সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করলেও চিন বেঁকে বসে। চিনের বাধায় ভারতের অন্তর্ভুক্তি এ যাত্রায় সম্ভব হয়নি। সিদ্ধান্ত ঝুলে রয়েছে। কারণ এনএসজিতে নতুন সদস্যের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতির ভিত্তিতে হয়। কোনও একটি সদস্য দেশ আপত্তি তুললেই নতুন সদস্যের অন্তর্ভুক্তি আটকে যায়। এই নিয়মের সুযোগ নিচ্ছে চিন, মনে করছেন মার্কিন কূটনীতিকরা। মার্কিন সরকারের পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি টম শ্যানন বলেছেন, ‘‘আমরা জানি যে সর্বসম্মতির ভিত্তিতে যে সব সংগঠনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সেখানে এক জন সদস্যই ঐকমত্য ভেস্তে দিতে পারে। কিন্তু সে কোনও পদক্ষেপ নিতে হলে তা দায়িত্বশীল ভাবে নেওয়া উচিত, বিচ্ছিন্ন ভাবে নয়।’’
এনএসজির অধিকাংশ সদস্য দেশই ভারতের অন্তর্ভুক্তির পক্ষে। সোলের বৈঠকে শুধু চিন যে ভারতের অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা করেছে, তা নয়। আরও কয়েকটি দেশ আপত্তির কথা জানিয়েছে। তবে চিনই প্রথম আপত্তি তোলে। চিন যে ভাবে এনপিটি সই না করার ইস্যু খুব বড় করে তুলে ধরেছে এনএসজির প্লেনারি বৈঠকে, তা না করলে অন্য কোনও দেশ আগ বাড়িয়ে আপত্তি করত না বলে কূটনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা। তাই নাম না করলেও, চিনই যে আমেরিকার লক্ষ্য, তা স্পষ্ট। ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে বলেই তা প্রয়োগ করতে হবে, এই মানসিকতা থাকা উচিত নয় বলে আমেরিকা বোঝাতে চাইছে। অধিকাংশ সদস্য দেশ যেখানে ভারতকে সংগঠনে চাইছে, তখন তাদের কারও মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে চিন যে ভাবে অনড় মনোভাব দেখিয়েছে, তা আমেরিকার একেবারেই পছন্দ নয়। চিন দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয়নি বলেই বোঝাতে চেয়েছে আমেরিকা।
আরও পড়ুন: পশ্চিমী দুনিয়ার তোষণে ভারত নষ্ট, আত্মতৃপ্ত দেশ: তীব্র বিষোদ্গার চিনের
মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি অবশ্য শুধু চিনকে কড়া বার্তা দিয়েই থামেননি। ভারতের ভূয়সী প্রশংসাও করেছেন। এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে ভারতই স্থিতিশীলতা এবং ভারসাম্য ধরে রেখেছে বলে মনে করেন টম শ্যানন। অপরপক্ষে চিন সম্পর্কে তিনি বলেছেন, দক্ষিণ চিন সাগরে বেজিং যা করতে চাইছিল, তা ‘উন্মাদের মতো কার্যকলাপ’ ছাড়া কিছু নয়। ‘চিনা আগ্রাসন’ রুখতে ভারত মহাসাগরে নয়াদিল্লি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বলে আমেরিকার তরফে মন্তব্য করা হয়েছে।