আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট। ছবি: রয়টার্স।
জাতি ও বর্ণের ভিত্তিতে আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ভর্তির নিয়মে নিষেধাজ্ঞা জারি করল সে দেশের শীর্ষ আদালত। বৃহস্পতিবার এক রায়ে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট। এই রায়ের ফলে সংখ্যালঘু এবং আফ্রিকান-আমেরিকানদের শিক্ষালাভের সুযোগ ধাক্কা খাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মহিলাদের গর্ভপাতের অধিকার আইন বাতিল করে দেওয়ার এক বছরে মধ্যেই ফের একটি আইন বাতিল করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। ১৯৬০ সালের উদারনীতি বাতিলের পক্ষে বহু নিদর্শন কোর্টে পেশ করা হয়েছিল। অবশেষে এই আইন বাতিলের পক্ষে ছয় জন রক্ষণশীল এবং বিপক্ষে তিন জন উদারপন্থী ভোট দেন। প্রধান বিচারপতি জন রবার্টসও আইন বাতিলের পক্ষে ভোট দেন। প্রধান বিচারপতি তার মতামতে লিখেছেন, “সেই সময় এই পদক্ষেপ সঠিক উদ্দেশে নেওয়া হলেও তা চিরকাল স্থায়ী হতে পারে না। অন্যদের জন্য এই সংরক্ষণ অসাংবিধানিক ও বৈষম্যমূলক।” তিনি আরও লিখেছেন, “ছাত্রছাত্রীদের বিচার পড়াশোনা এবং অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে করা দরকার, জাতি-বর্ণের ভিত্তিতে নয়। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এত দিন এর উল্টোটাই করে এসেছে। এর ফলে তাঁরা এক জনের পরিচয়কে মেধার ভিত্তিতে নয়, শরীরের রং বা জাতি হিসাবে দেখে এসেছে। এ সবই আমাদের সংবিধানের পরিপন্থী।” বিপক্ষের বিচারপতি সনিয়া সতমায়র সংখ্যাগরিষ্ঠকে ‘একটি স্থানীয় ভাবে বিচ্ছিন্ন সমাজ’-এর বাস্তবতার প্রতি বর্ণান্ধতা বলে তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, “জাতিকে উপেক্ষা করলেই সমাজে জাতিগত অসাম্য দূর হবে না। ১৮৬০ সালে যা সত্য ছিল, ১৯৫৪ সালেও তা সত্য এবং আজও তা সত্যই রয়েছে। সাম্যের জন্য বৈষম্যের স্বীকৃতি প্রয়োজন।”
শীর্ষ আদালতের এই রায়ের সঙ্গে সহমত পোষণ করেননি আমেরিকার প্রেসি়ডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, “এই রায় গত কয়েক দশকের ইতিহাস ভুলে গিয়েছে। আমেরিকায় এখনও বৈষম্য রয়েছে। আজকের এই সিদ্ধান্ত তা পাল্টাতে পারবে না। এটি একটি সহজ সত্য যে, যদি এক জন শিক্ষার্থীকে তাদের শিক্ষার পথে প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠতে চায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির উচিত সেই প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দেওয়া।”
কোর্টের রায়ের পর এ বিষয়ে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, বৈচিত্র্য এবং স্বতন্ত্রতা শিক্ষাগত শ্রেষ্ঠত্বের জন্য অপরিহার্য।