—ফাইল চিত্র
আফগানিস্তান থেকে সেনা ফেরাতে শুরু করল আমেরিকা। কিন্তু দেশটিতে শান্তি ফেরানোর প্রক্রিয়া এখনও অথৈ জলে।
বর্তমানে মার্কিন সেনার ২০টি ঘাঁটি রয়েছে এ দেশে। গত মাসে দোহায় তালিবানের সঙ্গে হওয়া চুক্তি মোতাবেক শান্তি আলোচনা শুরুর আগেই ৫টি ঘাঁটি থেকে সেনা ফেরানোর কথা আমেরিকার। তার মধ্যে দক্ষিণের হেলমন্দ প্রদেশের রাজধানী লস্কর গা এবং পশ্চিমে হেরাটের ঘাঁটি থেকে মার্কিন সেনা সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। হেলমন্দের গভর্নরের মুখপাত্র আজ জানিয়েছেন, ২০-৩০ জন বিদেশি লস্কর গা ছেড়ে গিয়েছে। কিন্তু তালিবানের সঙ্গে আজ থেকেই শান্তি আলোচনা শুরু কথা ছিল। কিন্তু সব জট ছাড়িয়ে এ দিন তা শুরু করা যায়নি। তালিবানের দাবি মতো ৫০০০ বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি তুলেছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি।
গত কালই প্রেসিডেন্ট পদে দ্বিতীয় বারের জন্য শপথ নিয়েছেন গনি। কিন্তু সদ্য হওয়া নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পরেও নিজেকে স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রী দাবি করছেন আবদুল্লা আবদুল্লা। গত কাল সমান্তরাল এক অনুষ্ঠানে ‘প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে শপথও নিয়েছেন তিনি। আবদুল্লার দাবি, ভোটে কারচুপি করে তাঁকে হারানো হয়েছে। আসলে জিতেছেন তিনিই। ডোনাল্ড ট্রাম্প বা গনির প্রশাসন, কেউই অবশ্য আবদুল্লার ‘শপথকে’ মান্যতা দেয়নি। গনির পাশে দাঁড়িয়েছে বেজিং-ও। তবে এটা বেশ স্পষ্ট, ১৮ বছর ধরে যুদ্ধ চলার পরেও আফগানিস্তানে কর্তৃত্ব কাদের হাতে, তা নিয়ে জট কাটেনি।
তবু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চান, আফগান যুদ্ধ থেকে মার্কিন ফৌজকে ফিরিয়ে আনতে। সে কারণেই তড়িঘড়ি তালিবানের সঙ্গে সমঝোতা করেছেন। তালিবান এটাকে তাদের জয় হিসেবেই দেখছে। দোহা-চুক্তি অনুযায়ী, আগামী জুলাই মাসের মাঝামাঝির মধ্যে এ দেশে তাদের সেনা-সংখ্যা ১২ হাজার থেকে ৮৬০০-তে নামিয়ে আনবে আমেরিকা। সরবে তাদের অন্যান্য মিত্র দেশের সেনাও। তবে শর্ত হল, আইএস বা আল-কায়দার মতো জঙ্গি গোষ্ঠীকে আশ্রয় বা প্রশ্রয় দিতে পারবে না তালিবান।
পাল্টা শর্ত দিয়েছে তালিবানও, ৫০০০ বন্দিকে মুক্তি দিতে হবে। এবং তাদের দেওয়া তলিকা অনুযায়ীই তা হতে হবে। তালিবান নেতৃত্ব পরিষদ ‘কোয়েট্টা শুরা’র দাবি, গনি শুধু সেই সব বন্দিদের ছাড়তে চাইছেন, যাঁরা হয় বৃদ্ধ, নয়তো শাস্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। ফলে শান্তি আলোচনা শুরু হওয়ার বদলে শুধু চাপানউতোরই চলছে আফগানিস্তানে। মার্কিন সেনাকর্তা জানাচ্ছেন, সেনা কমানোর পরেও আঘাতের ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব— কোনওটাই কমবে না আমেরিকার।