জো বাইডেন। —ফাইল চিত্র।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী বিশ্ব-রাজনীতিকে যে ঠান্ডা যুদ্ধ বা কোল্ড ওয়ার আন্দোলিত করেছিল, তা কি আবার ফিরে এসেছে? রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গোটা বিশ্ব যে ভাবে দুই মেরুতে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে, তার প্রেক্ষিতে এই প্রশ্নটি নানা মহল থেকেই উঠে আসছে। এ বার এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে তেমন জল্পনার কথা উড়িয়ে দিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে চিনের সঙ্গে সম্পর্কের প্রশ্নে ‘স্বাভাবিকতা’র বার্তা দিলেও আন্তর্জাতিক নিয়ম মানার বিষয়ে বেজিংকে বার্তা দিয়েছেন তিনি।
জি২০ সম্মেলন শেষে ভারত থেকে ভিয়েতনামে যান বাইডেন। ভিয়েতনাম যুদ্ধের ৫০ বছরেরও বেশি সময় পরে সে দেশে পা রাখলেন আমেরিকার কোনও প্রেসিডেন্ট। সেখানে একদা ‘শত্রু’ দেশের প্রশংসা করে বাইডেন জানান, তিনি এ দেশে এসেছেন, এমন চুক্তি স্বাক্ষর করতে, যাতে দুই দেশের সম্পর্ক ‘অভূতপূর্ব’ জায়গায় পৌঁছয়। ভিয়েতনামের সঙ্গে চিনের ‘নিবিড় সম্পর্কে’র কথা জেনেও সে দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরও প্রসারিত করতে উদ্যোগী হয়েছে ওয়াশিংটন।
সেখানেই চিনের সঙ্গে ঠান্ডা যুদ্ধের প্রসঙ্গে বাইডেন জানান, আমেরিকা চিনকে কোণঠাসা করতে চায় না। তবে আন্তর্জাতিক বিধি অনুযায়ী ভারসাম্য রক্ষা করতে চায়। ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে বিবিসি-র প্রশ্নের উত্তরে বাইডেন বলেন, “আমার মনে হয়, আমরা ঠান্ডা যুদ্ধ লব্জটা খুব বেশি ব্যবহার করছি। এটা তা নয়। এটা একান্তই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং ভারসাম্য রক্ষার বিষয়।” চিনের সাফল্য কামনা করে বাইডেন বলেন, “আমি চাই চিন অর্থনৈতিক ভাবে সাফল্য পাক। কিন্তু নিয়ম মেনেই যেন সাফল্য আসে।”
নিয়ম মানার প্রসঙ্গে তিনি কোনও দৃষ্টান্ত না দিলেও সাম্প্রতিক অতীতে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এবং দক্ষিণ চিন সাগরীয় অঞ্চলে চিনের ‘আগ্রাসন’ নিয়ে সরব হয়েছে আমেরিকা। আবার রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে মস্কো-বেজিং বোঝাপড়ার দিকেও কড়া নজর রয়েছে আমেরিকার। এই পরিস্থিতিতে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে আমেরিকার ঠান্ডা যুদ্ধের পরিস্থিতি আবার ফিরে আসছে কি না, তা নিয়ে জল্পনা চলছিল। বাস্তবে যা-ই ঘটুক, অন্তত মুখে তেমন সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিলেন বাইডেন।