(বাঁ দিকে) শি জিনপিং এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
আমেরিকায় চিনা দূতাবাস যুদ্ধ-প্রস্তুতির কথা বলতেই পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখল মার্কিন প্রশাসনও। আমেরিকার প্রতিরক্ষাসচিব পিট হেগসেথ জানিয়েছেন, তাঁরাও প্রস্তুত রয়েছেন। চিনের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধের আবহে আমেরিকার সামরিক সদর দফতর পেন্টাগনের এই বার্তা দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক চাপানউতর আরও বৃদ্ধি করল।
মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে বক্তৃতার সময়ে চিনকে আবার শুল্কযুদ্ধ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চিন-সহ বেশ কিছু দেশের নামোল্লেখ করে তিনি জানান, ওই দেশগুলি আমেরিকার পণ্যে যত বেশি শুল্ক চাপাবে, আমেরিকাও তত শুল্ক চাপাবে। এর পরেই আমেরিকায় চিনা দূতাবাস থেকে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করা হয়। সেখানে বলা হয়, “আমেরিকা যদি যুদ্ধই চায়, তা শুল্কযুদ্ধ হোক, বা বাণিজ্যযুদ্ধ কিংবা অন্য কোনও যুদ্ধ, আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে তৈরি আছি।”
এ বার চিনা দূতাবাসের ওই যুদ্ধ-প্রস্তুতির হুঁশিয়ারির পাল্টা দিল ট্রাম্পের প্রশাসনও। আমেরিকার প্রতিরক্ষাসচিব পিট হেগসেথ মার্কিন সংবাদমাধ্যমের এক অনুষ্ঠানে বলেন, “আমরাও তৈরি রয়েছি। যারা শান্তি চায়, তাদের যুদ্ধের জন্যও তৈরি থাকতে হয়।” যে কোনও রকমের সংঘাত এড়াতে সামরিক শক্তির প্রস্তুত থাকা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি। পিটের কথায়, “এই জন্যই আমরা নিজেদের সামরিক শক্তিকে নতুন ভাবে সাজিয়ে তুলছি। চিন বা অন্য কারও সঙ্গে যুদ্ধের মোকাবিলা করতে গেলে আমাদের শক্তিশালী হওয়া দরকার। প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প) বিলক্ষণ বোঝেন যে এই শক্তির মাধ্যমেই শান্তি আনা সম্ভব।”
ট্রাম্প আমেরিকার ক্ষমতায় আসার পরে চিনা পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ‘পাল্টা’ পদক্ষেপ হিসাবে আমেরিকার বেশ কিছু খাদ্যপণ্য এবং বস্ত্রের উপর আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি করেছে চিন। শুল্ক এবং পাল্টা শুল্ককে ঘিরে দু’দেশের বাণিজ্যিক এবং কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়েছে।
এই শুল্কযুদ্ধের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে মাদকদ্রব্য ফেন্টানাইলকে ঘিরে বিতর্ক। ওয়াশিংটনের বক্তব্য, সীমান্ত দিয়ে ফেন্টানাইল পাচার বন্ধ করতেই শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বেজিংকে হুঁশিয়ারি দিয়ে এর আগে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, চিনে তৈরি বহু অবৈধ ওষুধ মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে আমেরিকায় প্রবেশ করলেও বেজিং কোনও পদক্ষেপ করেনি। চিন যত দিন না এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে, তত দিন পর্যন্ত চিনা পণ্যে শুল্ক চাপানো হবে। যদিও ফেন্টানাইল প্রসঙ্গে ট্রাম্পের চিনের উপর দায় চাপানোয় আপত্তি রয়েছে বেজিংয়ের। চিনা বিদেশ মন্ত্রক স্পষ্ট করে দিয়েছে নিজেদের অবস্থান। তাদের বক্তব্য, আমেরিকায় ফেন্টানাইল সংক্রান্ত সমস্যার জন্য দায়ী আমেরিকাই। এর দায় অন্য কোনও দেশের উপর চাপানো যায় না বলে জানিয়েছে চিন।