Donald Trump

ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে ট্রাম্প সমর্থকদের হামলা, সংঘর্ষে মৃত ৪, উত্তাল আমেরিকা

বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে জোর করে ঢোকার চেষ্টা করতেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে গোটা চত্বর।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২১ ০৬:৫৫
Share:

ছবি— রয়টার্স।

কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে বৃহস্পতিবার নির্বাচনের জয়ের শংসাপত্র পেতে চলেছেন জো বাইডেন। কিন্তু তার আগেই উত্তাল হয়ে উঠল ওয়াশিংটন ডিসি। বুধবার আমেরিকার কংগ্রেসের ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে হামলা চালালেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা। কয়েক হাজার সমর্থক ট্রাম্পের সমর্থনে স্লোগান তুলে ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে জোর করে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করলেন।

Advertisement

মুহূর্তেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ক্যাপিটল বিল্ডিং চত্বর। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় পুলিশের। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে জোর করে ঢোকার চেষ্টা করতেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে গোটা চত্বর। এখনও পর্যন্ত চার জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আরও কয়েক জনের আহত হওয়ার খবর সামনে এসেছে। গ্রেফতার হয়েছেন প্রায় ৫০ জন।

পুলিশ সূত্রের খবর, ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে হাউস অব রিপ্রেসেন্টেটিভ এবং সেনেটের বৈঠক চলছিল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফলের চূড়ান্ত সিলমোহরের বিষয়টি নিয়ে। তখনই কয়েক হাজার ট্রাম্প-সমর্থক ক্যাপিটল বিল্ডিং ঘিরে ফেলেন। জোর করে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করেন। এই ঘটনার পরই গোটা ক্যাপিটল বিল্ডিং চত্বর নিরাপত্তার বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: নতুন স্ট্রেনে উপচে যাচ্ছে শিশু ওয়ার্ড

আরও পড়ুন: কৃষ্ণাঙ্গকে গুলি: মামলা থেকে ছাড় পুলিশের

আমেরিকার ভাবী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। দেশবাসীর উদ্দেশে টেলিভিশন বার্তায় তিনি বলেন, “ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ের ঘটনা আমেরিকার সত্যিকারের ছবি হতে পারে না। কিছু উগ্রপন্থা মনোভাবাপন্ন মানুষ এ কাজ করেছেন। এটা বিশৃঙ্খলা। এটা প্ররোচনা। আমাদের লক্ষ্য আইন মেনে চলা। একে অপরকে শ্রদ্ধ করা। এটাই গণতন্ত্রের দস্তুর হওয়া উচিত।”

ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে হামলা চালানোর এই নজিরবিহীন ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে বিশ্ব জুড়ে। হামলার নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বৃহস্পতিবার সকালে টুইট করে বলেন, ‘ওয়াশিংটন ডিসি-তে এই হিংসার ঘটনা বেদনাদায়ক। শান্তিপূর্ণ ভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হওয়া প্রয়োজন। গণতন্ত্র এ ধরনের হিংসার ঘটনাকে সমর্থন করে না।’ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন টুইট করে বলেছেন, ‘আমেরিকা কংগ্রেসের ইতিহাসে এটা একটা লজ্জাজনক ঘটনা।’ প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ এই ঘটনাকে ‘হৃদয়বিদারক এবং ঘৃণ্য’ বলে মন্তব্য করেছেন।

বুধবারই ট্রাম্প জনসভা করে হুমকি দিয়েছিলেন, “আমরা পিছু হটব না।” তার পরই ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে হামলার ঘটনা ঘটে। যদিও হামলার কয়েক ঘণ্টা পরে ট্রাম্প টুইট করে সমর্থকদের শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।

নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকেই ট্রাম্প অভিযোগ তুলে আসছেন ভোট জোচ্চুরি হয়েছে। এই ফলাফলকে তিনি কিছুতেই মানবেন না। এ নিয়ে বেশ কয়েকটি স্টেটসে মামলাও করেন ট্রাম্প। কিন্তু সব জায়গাতেই মুখ পুড়েছে তাঁর। কিন্তু তার পরেও একই দাবি তুলে বিভিন্ন জনসভায় প্রচার করছেন তিনি। এমনকি বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের উপরে খোলাখুলি চাপ বাড়িয়ে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। টুইটারে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট লেখেন, ‘‘অনিয়ম আর জালিয়াতির ভোটের সংশোধন চাইছে প্রদেশগুলো। দুর্নীতির এই প্রক্রিয়া কখনওই আইনসভার সম্মতি পায়নি। মাইক পেন্সকে এখন সেগুলো (ফলাফল) তাদের কাছেই ফেরত পাঠাতে হবে। আমরা জিতব। করে ফেলো মাইক, এটা সাহস দেখানোর সময়।’’ যদিও পেন্স বলেছেন, সংবিধান মেনেই তিনি যা করার করবেন।

বুধবারও এক জনসভা থেকে তাঁকে হুমকি দিতে শোনা যায় ট্রাম্পকে। তার পর পরই ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে হামলার ঘটনা ঘটে বলে খবর। গত ৩ নভেম্বর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়। জো বাইডেন পেয়েছেন ৩০৬টি ইলেক্টোরাল ভোট, সেখানে ট্রাম্পের ঝুলিতে গিয়েছে ২৩২টি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement