টিলারসন ও কিম। ছবি: এএফপি।
দু’জনের কেউই একে অপরকে সহ্য করতে পারেন না। এক জন তোপ দেগেই চলেছেন, দেশকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পরমাণু অস্ত্রধর দেশ’ বানাবেন। অন্য জন তাঁকে নিরস্ত্র করতে উঠেপড়ে লেগেছেন। ইনি ওঁকে ‘পাগলা বুড়ো’ বলছেন, তো পাল্টা খোঁচা, ‘‘আমি কি তোমায় বেঁটেমোটা বলেছি?’’
হঠাৎই ছন্দপতন! আজ ওয়াশিংটনে ‘অ্যাটলান্টিক কাউন্সিল-কোরিয়া ফাউন্ডেশন ফোরাম’-এর অনুষ্ঠানে উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উনের উদ্দেশে খানিক সমঝোতার বার্তাই দিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশ। ঝামেলা মিটিয়ে নেওয়ার সুরে মার্কিন বিদেশসচিব রেক্স টিলারসন বললেন, ‘‘একবার দেখা করাই যাক না।’’
কূটনীতিকরা অবশ্য এতে অন্য গন্ধ পাচ্ছেন। দু’সপ্তাহ আগেই উত্তর কোরিয়া ঢাকঢোল পিটিয়ে ঘোষণা করেছিল, তাদের আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ সফল হয়েছে। তা নিয়ে এ ক’দিন চাপানউতোর চলছিল মার্কিন প্রশাসনের অন্দরে। গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল, গোটা আমেরিকাকে নাকি গিলে ফেলতে পারে ওই ক্ষেপণাস্ত্র। অনেকেই বলছেন, এ সবের জেরেই কি সুর নরম? তবে কি ভয় পেয়েছে আমেরিকা? এই টিলারসন-ই তো কিছু দিন আগে বলেছিলেন, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কোনও সমঝোতায় যাওয়ার প্রশ্ন নেই। একমাত্র উত্তর কোরিয়া যদি পরমাণু অস্ত্র ত্যাগ করে, তা হলেই কথা বলা যেতে পারে। তা হলে আজ একেবারে উল্টো সুর কেন?
টিলারসন আজ বলেন, ‘‘উত্তর কোরিয়ার যখনই সময় হবে, আমরা কথা বলতে রাজি। এর মধ্যে কোনও শর্তও রাখা হচ্ছে না। এবং তার পরে আমরা নিজেদের মতো পরিকল্পনা তৈরি করতে পারি। একটা পথনির্দেশিকা বানাতে পারি, যে পথে দু’দেশই চলতে পারে।’’
কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট তো বলেই দিয়েছিলেন, আলোচনার আর সুযোগ নেই। বিদেশসচিবের স্পষ্ট জবাব, ‘‘কেউ তাদের পূর্বনির্ধারিত পরিকল্পনা ত্যাগ না করলে আমরা কথাই বলব না—এটা অবাস্তব ব্যাপার। তা ছাড়া, ওরাও তো পরমাণু অস্ত্র প্রকল্পে প্রচুর অর্থ ঢেলেছে! প্রেসিডেন্ট এ বিষয়ে যথেষ্টই বাস্তববাদী।’’
তবে কথা বলতে চাওয়া মানেই যে অবস্থান বদল নয়, সেটা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে হোয়াইট হাউস। এ দিন হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব সারা স্যান্ডার্স বলেন, ‘‘উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে প্রেসিডেন্টের দৃষ্টিভঙ্গি একই রয়েছে। শুধু জাপান, চিন, দক্ষিণ কোরিয়া নয়, গোটা বিশ্বের জন্যই উত্তর কোরিয়া বিপজ্জনক। ওরা যা যা করছে, তা কারও পক্ষেই ভাল নয়। ওদের নিজেদের জন্য তো নয়ই।’’