প্রতীকী ছবি।
ঘরহারাদের জন্য বিশেষ শিবিরে ঠাঁই হয়েছিল তাঁদের। কিন্তু নতুন করে সেই ঘরও হারাতে হয়েছিল। বাইরে হিমাঙ্কের বহু নীচে তাপমাত্রা। কী করবেন, কোথায় যাবেন— এই সব ভেবে তাঁরা যখন আতঙ্কিত, হঠাৎই এগিয়ে এলেন এক অজ্ঞাতপরিচয় ‘বন্ধু’। নিয়ে গেলেন নতুন আশ্রয়ে।
বুধবার শিকাগো শহরতলির একটি আশ্রয় শিবিরে ঘর গরম রাখার প্রোপেন ট্যাঙ্কে বিস্ফোরণ ঘটে। কেউ আহত হননি। কিন্তু বিপদের ভয়ে আশপাশের একশোটি ট্যাঙ্ক সরিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। ফলে ওই শিবিরে ঘর গরম রাখার ব্যবস্থা পুরোপুরি অকেজো হয়ে যায়। আশ্রয় শিবিরের ৭০ জন বাসিন্দাকে কোথায় সরানো হবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যায় প্রশাসন। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিকল্প ব্যবস্থা করার চেষ্টা শুরু করে। এমন সময় হঠাৎই ফোন আসে, কোনও এক সহৃদয় ব্যক্তি একটি হোটেলে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। হোটেলের বিলও মিটিয়ে দিয়েছেন তিনি। ঘরহারাদের সাহায্যে এগিয়ে আসা এই শুভানুধ্যায়ীর পরিচয় অবশ্য জানা যায়নি।
একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মুখপাত্র জ্যাকলিন র্যাচেভ বলেন, ‘‘শীতের বাকি দিনগুলো ওদের হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন কিছু অসাধারণ মানুষ।’’ শিকাগোয় এমন পথবাসীর সংখ্যা নেহাত কম নয়। অন্তত ৮০ হাজার। অনেকেই এগিয়ে আসছেন এঁদের সাহায্য করতে। দমকল বাহিনীর পক্ষ থেকে বারবার করে বলা হচ্ছে, আর যা-ই সাহায্য দিতে চান, প্রোপেন ট্যাঙ্ক দেবেন না। কারণ আগুন লাগার ঝুঁকি বেশি।
ঘরহারাদের বন্দোবস্ত হলেও পেশা সূত্রে যাঁদের দিনের অনেকটা সময় রাস্তায় কাটাতে হয়, বিপদে পড়ছেন তাঁরাও। বৃহস্পতিবার ইলিনয়ে এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, তিনি কোনও কুরিয়ার সংস্থার গাড়ির চালক ছিলেন। এই সপ্তাহে শিকাগোয় এমন পেশায় নিযুক্ত অন্তত চার জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে।
তবে সুখবরও রয়েছে। আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, এ বার ধীরে ধীরে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়বে। শুক্রবার দুপুর থেকেই বেশ একটু গা ঝাড়া দিয়েছে শিকাগো। পারদ উঠেছে। দু’দিন আগেই যে শহরটা মাইনাস ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে (মাইনাস ২২ ডিগ্রি ফারেনহাইট) কাঁপছিল, এখন সেখানে মাইনাস ৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস (২২ ডিগ্রি ফারেনহাইট)। কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে শিকাগোর এক বাসিন্দা বললেন, ‘‘৫০ ডিগ্রি (ফারেনহাইটে) মতো বেড়ে গিয়েছে তাপমাত্রা। মনে হচ্ছে, বসন্ত এসে গিয়েছে।’’