শাসকের বিরুদ্ধে ইরান জুড়ে চলছে বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স।
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খোমেইনির একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে ইরানের জনতার বড় অংশ। আর সেই প্রতিবাদীদের উপর ইরানের পুলিশ ও সেনা নির্মম দমন-পীড়ন চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতি নিয়ে এ বার উদ্বেগ প্রকাশ করল রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশন। সংস্থার হাই কমিশনার ভোলকার তুর্ক বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘ইরানে যা চলছে, তা পুরোপুরি মানবাধিকার সঙ্কট।’’
সেপ্টেম্বরের গোড়ায় হিজাব ছাড়া রাজধানী তেহরানের রাস্তায় বেরিয়েছিলেন ২২ বছরের এক তরুণী। ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে আটক করে পুলিশ। থানায় রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় মাহশা আমিনি নামে ওই তরুণীর। এর পর থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয় পশ্চিম এশিয়ার দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে। আর সেই সঙ্গে শুরু হয় পুলিশ ও সেনার নিপীড়ন। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি খবরে ধৃত মহিলা বিক্ষোভকারীদের উপর জেলে যৌন নির্যাতনের অভিযোগও প্রকাশ্যে এসেছে।
অতিমারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, তাইওয়ান সঙ্কটের জেরে ভূ-অর্থনীতি এবং ভূকৌশলগত পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে গিয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরেই পশ্চিমের অভিযোগ, লেবাননে হিজবুল্লা, গাজায় হামাস এবং ইরাকে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের পিছনে ইরানের প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে। এ ছাড়াও ইরান ‘পরমাণু শক্তিধর দেশ’ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার চেষ্টায় আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ উন্নত দেশগুলি ক্রমাগত বাধা দিচ্ছে।
২০১৮ সালে ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি থেকে আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফা সরে এসে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন তেহরানের বিরুদ্ধে। চুক্তিটি পুনরুদ্ধারের জন্য ২০২১ সালের এপ্রিলে ভিয়েনায় যে আলোচনা শুরু হয়েছিল, তা তেহরান এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে বেশ কয়েকটি বিষয়ে মতপার্থক্যের কারণে গত মার্চ থেকে স্থগিত রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনের বক্তব্যকে হাতিয়ার করে ইরানের উপর আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধ কঠিন করা হতে পারে বলে কূটনৈতিক মহলের একাংশের অনুমান।