ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট রোবার্তা মেতলোসার সঙ্গে বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে। ছবি: রয়টার্স।
আর মাত্র কয়েকটা দিন। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের এক বছর অতিক্রান্ত হবে। তার ঠিক আগে সামরিক ও অন্যান্য সাহায্য চেয়ে ইউরোপ সফরে গেলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি।
বুধবার, সফরের প্রথম দিনে লন্ডনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনকের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। এর পরে পৌঁছন প্যারিসে। বুধবার রাতটা ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁর অতিথি হয়ে কাটিয়েছেন জ়েলেনস্কি। সেখানে মাকরঁ এবং জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ়ের সঙ্গে নৈশভোজ সারেন। ফ্রান্স ও জার্মানির শীর্ষনেতাদের সঙ্গে আলোচনার পরে জ়েলেনস্কি বলেছেন, ‘‘হাতে সময় কম। তবে এই যুদ্ধে খেলা ঘোরাবার ক্ষমতা রয়েছে ফ্রান্স, জার্মানির। যত তাড়তাড়ি আমরা দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হাতে পাব, যুদ্ধবিমান পাব, তত তাড়াতাড়ি রুশ আগ্রাসনে ইতি টানতে পারব।’’ অন্য দিকে, জ়েলেনস্কির সাহস এবং নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতাকে কুর্নিশ জানিয়ে তাঁকে সর্বোচ্চ ফরাসি সম্মান লিজ়িয়ঁ দ্য’নর-এ সম্মানিত করেছেন মাকরঁ।
ফ্রান্স ও জার্মানির মতো ব্রিটেনেও জ়েলেনস্কির পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে। দু’দেশের শীর্ষনেতার যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে সুনক বলেছেন, ‘‘রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে নিয়ে যেতে ব্রিটেন যে ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান ও সমরাস্ত্রের জোগান দিয়ে যাবে, তা খোলাখুলি জানাচ্ছি।’’ ব্রিটেন থেকে অত্যাধুনিক চ্যালেঞ্জার ট্যাঙ্ক এবং জার্মানিতে তৈরি লেপার্ড ট্যাঙ্ক ইউক্রেনে পাঠানোর তোড়জোড় চলছে। লন্ডনে জ়েলেনস্কিকে সে সব ঘুরিয়ে দেখান সুনক। পাশাপাশি, নেটোর যুদ্ধবিমান এবং ইউক্রেনীয় বিমানচালকদের অত্যাধুনিক বিমান চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সুনক।
লন্ডন, প্যারিস ঘুরে আজ সকালে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে পৌঁছেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। সঙ্গে এসেছেন মাকরঁ। সেখানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতাদের সঙ্গে তাঁদের বৈঠক হওয়ার কথা। ইউরোপীয় পার্লামেন্টেও যাওয়ার কথা রয়েছে জ়েলেনস্কি। মনে করা হচ্ছে, ইইউ-এ ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে আলোচনায় এগোতে চান জ়েলেনস্কি। এখনও পর্যন্ত ইউক্রেনকে ৭২০০ কোটি ডলারের সাহায্য পাঠিয়েছে ইইউ।
যুদ্ধ শুরু পরে এটি জ়েলেনস্কির দ্বিতীয় বিদেশ সফর। এর আগে ডিসেম্বরে ওয়াশিংটনে গিয়েছিলেন তিনি। আমেরিকা সফরের পরে ইউরোপের অন্যতম বন্ধুরাষ্ট্রগুলিকে আরও বেশি করে পাশে তাঁর এই সফর বলে মনে করা হচ্ছে।