Russia

Ukraine Russia Conflict: রাশিয়া থেকে তেল কিনে কি পুতিনকে যুদ্ধের খরচ যোগাচ্ছে ইউরোপ? উঠছে প্রশ্ন

আমেরিকা দাবি করেছে, যুদ্ধের ভাঁড়ারও ফুরোতে শুরু করেছে মস্কোর। ক্ষেপণাস্ত্র ফুরিয়েছে। অন্যান্য অস্ত্রও বাড়ন্ত।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২২ ০৪:৪৬
Share:

মস্কো গোটা বিশ্বে যে পরিমাণ তেল রফতানি করে, তার চার ভাগের এক ভাগ যায় ইউরোপে। ছবি: রয়টার্স।

আরও সামরিক সাহায্য দেওয়া হবে ইউক্রেনকে। ত্রাণ ও চিকিৎসা সামগ্রীও। আশ্রয় দেওয়া হবে ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের। কাল দিনভর নেটো, জি৭, ইউরোপীয় কাউন্সিলের ঝোড়ো বৈঠকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে নানা প্রতিশ্রুতি শোনা গিয়েছে। যদিও মস্কোর বিরুদ্ধে গিয়ে ইউক্রেনের আকাশকে ‘নো-ফ্লাই জ়োন’ ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিতে রাজি হয়নি কেউই। তেমনই, রাশিয়ার তেল নিয়েও দ্বিধাবিভক্ত দেশগুলি। এখনও পর্যন্ত যার সমাধান মেলেনি।

Advertisement

ব্রাসেলসের বৈঠক সেরে আজ পোল্যান্ডে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। পোল্যান্ড সরকারের সঙ্গে এই বৈঠকের মূল বিষয়বস্তু ইউরোপে বাড়তে থাকা শরণার্থী সমস্যা। রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, ইউক্রেন থেকে অন্তত ৩৬ লক্ষ শরণার্থী ছড়িয়ে পড়েছেন মহাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে। বাইডেন জানিয়েছেন, ১ লক্ষ ইউক্রেনীয়কে আমেরিকায় স্বাগত জানাতে তিনি তৈরি। এ ছাড়া ১০০ কোটি ডলার মূল্যের খাদ্য, ওষুধ, জল ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসও তাঁরা দেবেন। এ দিন পোল্যান্ডে নিযুক্ত আমেরিকার ‘৮২তম এয়ারবোর্ন ডিভিশন’ বাহিনীর সঙ্গে দেখা করেন বাইডেন।

যুদ্ধ শুরুর ঠিক এক মাসের মাথায় বৈঠকগুলি হল। বাইডেন জানিয়েছেন, এই সময়ে এই বৈঠক ডাকার একটাই কারণ, যে ভাবে গত এক মাস এক জোটে সকলে ‘লড়েছে’, সে ভাবেই সামনের মাস, তার পরের মাস, গোটা বছর জোট বেঁধে থাকতে হবে সকলকে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে ‘একজোট’ হয়ে থাকাকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন বাইডেন।

Advertisement

যদিও তেলের কথা উঠতেই মতানৈক্য শুরু হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিতে ৪০ শতাংশ জ্বালানি আসে রাশিয়া থেকে। মস্কো গোটা বিশ্বে যে পরিমাণ তেল রফতানি করে, তার চার ভাগের এক ভাগ যায় ইউরোপে। বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজ়ান্ডার ডি ক্রু বলেন, ‘‘আমাদের মধ্যে কোনও যুদ্ধ চলছে না। নিষেধাজ্ঞা জারি হলে আমাদের উপরে যেমন তার প্রভাব পড়বে, তেমনই রুশদের আরও বড় ক্ষতি হবে।’’ রাশিয়ার নিকটবর্তী দেশগুলি অবিলম্বে মস্কো-বিরোধী পদক্ষেপ করতে চায়। কিন্তু বেলজিয়ামের মতো জার্মানি, অস্ট্রিয়া এবং নেদারল্যান্ডসও বুঝেশুনে পা ফেলার পক্ষপাতী।

ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সানা মারিন বলেন, ‘‘যত দিন আমরা রাশিয়ার থেকে জ্বালানি কিনব, তত দিন মেনে নিতে হবে, আমরাই ওদের যুদ্ধের খরচ বহন করছি। এটা একটা বড় সমস্যা।’’ বাল্টিক রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে মারিনও চান, অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হোক মস্কোর বিরুদ্ধে। লাটভিয়ার প্রধানমন্ত্রী ক্রিসজানিস কারিনও বলেছেন, ‘‘পুতিনের অর্থনীতি, রাশিয়ার অর্থনীতিকে একঘরে করে দিতে হবে— যাতে যুদ্ধ-যন্ত্রে অর্থ আসা বন্ধ হয়।’’ এই দ্বিধা-দ্বন্দ্বে কানাডা জানিয়েছে, তারা ইউরোপে জ্বালানির রফতানি বাড়াতে রাজি। আমেরিকাও জানিয়েছে, তারা এত দিন যা জ্বালানি রফতানি করত ইউরোপে, তার সঙ্গে আরও ১৫০০ কোটি ঘনমিটার তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) পাঠাবে এ বছর।

ইতিমধ্যেই ইউরোপ-আমেরিকার আর্থিক নিষেধাজ্ঞার ভারে জর্জরিত রাশিয়া। প্রভাব পড়তে শুরু করেছে সাধারণ রুশ ঘরগেরস্থালিতেও। আমেরিকা আজ দাবি করেছে, যুদ্ধের ভাঁড়ারও ফুরোতে শুরু করেছে মস্কোর। ক্ষেপণাস্ত্র ফুরিয়েছে। অন্যান্য অস্ত্রও বাড়ন্ত। তা ছাড়া, বহু ক্ষেপণাস্ত্র কাজ করছে না। ওয়াশিংটনের দাবি, রুশ ক্রুজ় মিসাইল হামলা ব্যর্থ হওয়ার ঘটনা ২০ থেকে ৬০ শতাংশ। এর মধ্যে শোনা যাচ্ছে, কিভের পূর্ব শহরতলির কিছু অংশের ফের দখল নিয়েছে ইউক্রেন। ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক দাবি করেছে, তারা ইউক্রেনের থেকে খবর পেয়েছে, বেশ কিছু জায়গায় পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে রুশ বাহিনী। কিভ দাবি করেছে, খেরসনে তাদের হামলায় নিহত রুশ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াকভ রেজ়ান্টসেভ। এই নিয়ে ছ’জন রুশ সেনাকর্তা নিহত হলেন যুদ্ধে। নেটোর দাবি, ৭ হাজার থেকে ১৫ হাজার রুশ সেনা প্রাণ হারিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement