আকাশছোঁয়া জলোচ্ছ্বাস। টাইফুন চ্যান হম আছড়ে পড়ল পূর্ব চিনের ঝেজিয়াং এলাকায়। ছবি: এএফপি।
আশঙ্কা ছিলই। সেটাই সত্যি হল। জাপানের ওকিনওয়া দ্বীপপুঞ্জ এবং তাইওয়ানে তাণ্ডব চালিয়ে আজ বিকেলে পূর্ব চিনে আছড়ে পড়ল টাইফুন ‘চ্যান হম’। চলতি বছরে এর আগে প্রায় আট বার টাইফুনের তাণ্ডবে জেরবার হয়েছে চিন। তবে আজকের টাইফুন ভেঙে দিয়েছে ৬৬ বছরের রেকর্ড।
টাইফুনের পূর্বাভাস জারি হওয়ার পরেই অবশ্য উপকূলবর্তী এলাকা থেকে প্রায় দশ লাখেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে প্রায় ২০০০ ট্রেন এবং কয়েকশো বিমান। গত কাল রাত থেকেই উপকূলবর্তী নিগবোর প্রায় ১৩৯টি গ্রামে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বিদ্যুৎ সরবরাহ। সেই সঙ্গে স্কুল কলেজও ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
আজ বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ ঘণ্টায় প্রায় ১৮৭ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসে ‘চ্যান হম’। ঝেজিয়াং এবং তার আশপাশের এলাকাগুলির উপর তাণ্ডব চালাতে থাকে তীব্র ঝোড়ো হাওয়া। সঙ্গে বৃষ্টি। টাইফুনের দাপটে জলোচ্ছ্বাসও শুরু হয়। এক-একটা ঢেউয়ের উচ্চতা ছিল প্রায় ১০ মিটার। কয়েক তলা বাড়ির সমান। সেই কারণে উপকূলের কাছ থেকে মানুষজনকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, প্রায় তিরিশ হাজার মাছ ধরার নৌকাও বন্দরে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে জাতীয় সড়কও।
প্রশাসন জানিয়েছে, ঝড় বৃষ্টির জেরে বেশ কিছু গ্রাম এখন জলের তলায়। বন্যার তোড়ে ভেসে গিয়েছে প্রায় ৯৪টি ঘর-বাড়ি। তবে এখনও পর্যন্ত হতাহতের কোনও খবর নেই।
প্রবল ঝড়-বৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণটাও কিছু কম নয়। এখনও পর্যন্ত ক্ষতির যে হিসেব পাওয়া গিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, মোট ৩১ কোটি ৮০ লক্ষ ডলার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত চাষের জমি।
উপকূলবর্তী হুয়াংআং গ্রামের এক বাসিন্দা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘তীব্র ঝড়ের পূর্বাভাস ছিলই। ফলে আগে থেকেই বাড়িতে খাবারও সংগ্রহ করে রেখেছিলাম। তবে এই টাইফুন যে এতটা শক্তিশালী হতে পারে, সেটা ভাবতে পারিনি। তাই দরজা জানলা এঁটে ঘরেই ছিলাম।’’