প্রতীকী ছবি।
এক জনের বয়স ১১, অন্য জনের ১৪। রক্তাক্ত শরীরে গুলির ক্ষত দগদগ করছে। সান ফ্রান্সিসকোর কাছে সৈকত এলাকায় ‘ইউনিয়ন সিটি’র একটি প্রাথমিক স্কুলের পার্কিং লটে ভ্যানের ভিতর থেকে এ ভাবেই উদ্ধার করা হল দুই বালককে। এক জন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। অন্য জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত ঘোষণা করা হয়।
জনবসতি এলাকায় স্কুলটি, অল্প জায়গা জুড়ে। শনিবার রাত দেড়টা নাগাদ ঘুমিয়ে পড়েছিলেন বাসিন্দারা। হঠাৎই পরপর গুলির আওয়াজে কেঁপে ওঠে চারপাশ। সে খবর জানিয়ে ৯১১ (আপৎকালীন ফোন নম্বর)-এ ফোন করতে থাকেন আতঙ্কিত লোকজন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে স্কুলের পার্কিং লটে ভ্যানটির মধ্যে ছেলে দু’টিকে পায়।
ওই এলাকার বাসিন্দা গিগি এরিকসন স্থানীয় একটি সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, গুলির শব্দে তাঁর ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। বলেন, ‘‘হঠাৎ রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে গুলির আওয়াজ... একটানা। মনে হচ্ছিল মেশিনগান চলছে। বুঝতে পারছেন তো কেমন একটানা।’’ ছেলে দু’টির দেহ পাওয়ার কথা শুনে বিস্ময় কাটছে না মহিলার। বললেন, ‘‘অত রাতে ওরা ওখানে কী করছিল! ভেবেই বুক কেঁপে উঠছে, না জানি ওদের সঙ্গে কী হয়েছে।’’
পুলিশ এখনও সন্দিহান এ বিষয়ে। ছেলে দু’টি ওই ভ্যানের মধ্যে কী করছিল, তাদের সঙ্গে কোনও বড় কেউ ছিল কি না, থাকলে তিনি কোথায় গেলেন... এমন বহু প্রশ্নের উত্তর হাতড়ে বেড়াচ্ছে পুলিশ। তদন্তের স্বার্থের দুই বালকের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। ও দিকে অপরাধী কারা, তারা পায়ে হেঁটে এসেছিল নাকি গাড়িতে, এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সূত্রের সন্ধান করছে পুলিশ। তারা জানিয়েছে, এমনিতে শান্তিপ্রিয় এলাকা এটি। মূল সান ফ্রান্সিসকো শহরের আধ ঘণ্টার দূরত্বে ‘ইউনিয়ন সিটি’। আনুমানিক ৭৫ হাজার লোকের বাস। প্রশাসনের কাছে থাকা অপরাধের রেকর্ড অনুযায়ী, ২০১৬ সাল পর্যন্ত এখানে গড়ে বছরে খুনের সংখ্যা এক। এমন নিরুপদ্রব এলাকায় শনিবার গভীর রাতে টানা ১৫-২০ রাউন্ড গুলি! শুধু তা-ই নয়। তিন দিন আগেই, বুধবার খুব ভোরে স্কুল এলাকা থেকে আধ-মাইল দূরে একটি অঞ্চলে গুলি চলেছিল। সেখানে অবশ্য কেউ হতাহত হননি। দু’টো ঘটনার যোগসূত্র আছে কি না দেখছে পুলিশ। হন্যে হয়ে সূত্র খুঁজে চলেছে তারা।
‘দ্য নিউ হ্যাভেন ইউনিফায়েড স্কুল ডিসট্রিক্ট’-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিহত এক বালক তাদের স্কুলের পড়ুয়া। বয়সে বড় জন আগে ওই স্কুলে পড়ত। স্কুল ডিসটিক্ট্রের সুপারিন্টেনডেন্ট জন টমসন জানিয়েছেন, স্কুলের সব পড়ুয়া ও কর্মীদের পাশে রয়েছেন তাঁরা। তদন্তে সব রকম ভাবে সাহায্য করছেন শহরের পুলিশকে।