ওমান সাগরে জ্বলছে তেলের ট্যাঙ্কার। বৃহস্পতিবার। এপি
ঠিক এক মাসের ব্যবধান। উপসাগরীয় এলাকায় ফের আক্রান্ত তেলবাহী জাহাজ। যার জেরে গোটা উপসাগরীয় এলাকায় উত্তেজনার পারদ আরও কয়েক ধাপ চড়ল। বাড়ছে তেলের দামও।
এক ঘণ্টার মধ্যে আজ সকালে ওমান উপসাগরে হামলা চালানো হয় দু’টি তেলবাহী জাহাজের উপরে। দু’টি জাহাজের ৪৪ জন কর্মীই অবশ্য অক্ষত রয়েছেন। তাঁরা জলে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণে বেঁচেছেন বলে জানা গিয়েছে। জাহাজ দু’টিতে থাকা সামগ্রীরও কোনও ক্ষতি হয়নি। তবে এর পিছনে কাদের হাত রয়েছে, তা এখনও অস্পষ্ট। গোটা ঘটনা সন্দেহজনক বলে টুইট করেছেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী মহম্মদ জাভাদ জ়ারিফ। বস্তুত ইরানের উদ্ধারকারী দলই জাহাজ দু’টির সব কর্মীকে উদ্ধার করে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এক মাস আগে পারস্য উপসাগরে সৌদি তেলবাহী জাহাজেও হামলা চালানো হয়েছিল। কোনও প্রাণহানি না হলেও জাহাজ দু’টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সৌদি আরব থেকে আমেরিকায় তেল সরবরাহ করতে যাচ্ছিল জাহাজ দু’টি। গোটা ঘটনার পিছনে ইরানের মদতে পুষ্ট জঙ্গি গোষ্ঠীর হাত রয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছিল সৌদি আর মার্কিন সরকার। যদিও প্রথম থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে তেহরান। পরবর্তী সময়ে তদন্তকারীরাও এই হামলায় ইরানের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রয়েছে বলে প্রমাণ জোগাড় করতে পারেননি।
আজ প্রথম ঘটনাটি ঘটে স্থানীয় সময় সকাল পৌনে ন’টা নাগাদ। ইরানের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ‘ফ্রন্ট অল্টেয়ার’ নামে নরওয়ের একটি জাহাজে পর পর তিনটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। জাহাজটি তখন দক্ষিণ ইরানের বন্দর-এ-জাসক থেকে ২৫ নটিক্যাল মাইল দূরে ছিল। খুব সম্ভবত টর্পেডোর সাহায্যে হামলা চলে সেখানে। দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে সেটি। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় ওমান উপসাগরের আকাশ। প্রবল দাহ্য ইথানল নিয়ে কাতার থেকে তাইওয়ান যাচ্ছিল জাহাজটি। পরের হামলাটি ঘটে প্রায় এক ঘণ্টা পরে। সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে এ বার হামলা চলে ‘কোকুকা কারেজাস’ নামে সিঙ্গাপুরের একটি তেলবাহী জাহাজে। সেটি তখন সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে ৭০ নটিক্যাল মাইল দূরে ছিল। যাচ্ছিল সৌদি আরব থেকে সিঙ্গাপুর। ওই জাহাজের এক কর্মী আহত হলেও তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গিয়েছে।
আমেরিকার পঞ্চম নৌবহর একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, দু’টি জাহাজ থেকেই তাদের কাছে বিপদ বার্তা গিয়েছিল। তবে এ বার এখনও পর্যন্ত তেহরানের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেনি ওয়াশিংটন।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এখন তেহরানে রয়েছেন। আমেরিকার সঙ্গে গত কয়েক মাস ধরে ইরানের যে চাপা উত্তেজনা চলছে, তা খানিকটা কমাতেই আবের এই ইরান সফর। সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়তোল্লা খামেনেইয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে আবের। ইরানের বিদেশমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘আবের সফরের সময়েই এই হামলা সন্দেহ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।’’