Environment

Environmental award: পরিবেশ পুরস্কারের শীর্ষে দুই ভারতীয়

তিন চাকার নীল রঙের একটা ছোট্ট গাড়ি। গায়ে ভারতের তেরঙা পতাকা আঁকা। দেখতে-শুনতে সাধারণ। কিন্তু এর বিশেষত্ব আছে।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

লন্ডন শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৪:৪২
Share:

বিদ্যুৎ মোহন ও বিনিশা

তিন চাকার নীল রঙের একটা ছোট্ট গাড়ি। গায়ে ভারতের তেরঙা পতাকা আঁকা। দেখতে-শুনতে সাধারণ। কিন্তু এর বিশেষত্ব আছে। সৌরশক্তি চালিত গাড়িটি আসলে দূষণহীন ইস্ত্রি-মেশিন। এই যন্ত্র বানিয়েই খবরের শিরোনামে তামিলনাড়ুর তিরুবন্নমলাইয়ের ১৪ বছরের কিশোরী বিনিশা উমাশঙ্কর। ব্রিটেনের রাজকুমার উইলিয়ামের ঘোষিত ৫ কোটি পাউন্ড মূল্যের পরিবেশ পুরস্কার ‘আর্থশট প্রাইজ়’-এর ফাইনালে উঠেছে সে।

Advertisement

এ বছরই প্রথম দেওয়া হচ্ছে এই পুরস্কার। পরিবেশ রক্ষায় যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের সম্মানিত করাই এই পুরস্কারের উদ্দেশ্য। বিনিশার পাশাপাশি প্রথম পনেরোয় জায়গা করে নিয়েছে আর এক ভারতীয় বিদ্যুৎ মোহনের সংস্থা ‘টকাচার’।

ভারতে অন্তত এক কোটি দোকানে জামাকাপড় ইস্ত্রি করা হয় কয়লা ব্যবহার করে। দোকানগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বসতি এলাকায়। ‘আর্থশট প্রাইজ়’-এর সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, বিনিশা যে সৌরপ্রযুক্তি ব্যবহার করছে, তা কয়লা ব্যবহারের মতো অপরিষ্কার নয়, দূষণও নেই। পাঁচ ঘণ্টা সূর্যের আলো পেলে ছ’ঘণ্টা চলে যন্ত্রটি। তাতে দোকানিদের লাভ হবে, পরিবেশের পক্ষেও ভাল হবে। তা ছাড়া, পুরো ব্যবস্থাটি একটি গাড়িতে। ফলে দোকানদার বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করতে পারবেন। অন্য কিছু বিক্রির ব্যবস্থাও রাখতে পারবে গাড়িতে।

Advertisement

তিরুবন্নমলাইয়ে নিজের বাড়িতে বসে বিনিশা বলেছে, ‘‘বায়ুদূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন রুখতে সাহায্য করবে আমার যন্ত্র। বিপুল পরিমাণে কয়লা ব্যবহার করা হয় এই কাজে, যা অস্বাস্থ্যকর, জলবায়ুর পক্ষে খারাপ, পৃথিবীর জন্য ক্ষতিকর।’’ গত বছর এক সুইডিশ সংস্থার ‘চিল্ড্রেন’স ক্লাইমেট প্রাইজ়’ জিতেছিল বিনিশার আবিষ্কার।

বিদ্যুৎ মোহনের সংস্থা ‘টকাচার’ এমন একটি যন্ত্র তৈরি করেছে, যেটি কৃষিকাজ থেকে তৈরি দূষণ নিয়ন্ত্রণ করবে। ফসলের গোড়া না পুড়িয়ে (অপ্রয়োজনীয় অংশ) তার থেকে জৈব সার ও জ্বালানি তৈরি করতে পারে অল্প খরচে তৈরি যন্ত্রটি। প্রতি বছর ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে চাষের পরে ফসলের গোড়া পোড়ানো হয়। এর ফলে ব্যাপক হারে দূষিত হয় বাতাস। দিল্লির বায়ুদূষণের অন্যতম কারণই ধরা হয় পার্শ্ববর্তী গ্রামীণ অঞ্চলে ফসলের গোড়া পোড়ানো।

আগামী ১৭ অক্টোবর আলেকজ়ান্দ্রা প্যালেসে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান হবে। সেখানে এই পনেরো জনের মধ্যে পাঁচ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে। বিজয়ীদের বেছে নেবেন স্বয়ং রাজকুমার উইলিয়াম। তাঁর সঙ্গে বিচারকমণ্ডলীতে রয়েছেন স্যার ডেভিড অ্যাটেনবরো, অভিনেত্রী কেট ব্ল্যাঞ্চেট ও জর্ডনের রানি রানিয়া।

প্রতিযোগিতার পাঁচটি বিভাগের মধ্যে ‘বাতাস শোধন’ বিভাগে মনোনীত হয়েছে বিনিশা উমাশঙ্কর ও বিদ্যুৎ মোহনের সংস্থা ‘টকাচার’। রাজকুমার উইলিয়াম বলেন, ‘‘এমন ১৫ জন উদ্ভাবককে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরতে পেরে আমি সম্মানিত। মানব সভ্যতার সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি বিশ্ব। এঁরাই আমাদের আশা দেখাচ্ছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement