আবু বকর আল বাগদাদি। —ফাইল চিত্র
অবশেষে জল্পনাই সত্যি হল। সকালের কথা মতো সন্ধ্যায় ‘বড় ঘোষণা’করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। জানালেন, শনিবার সিরিয়ায় নিহত হয়েছে ইসলামিক স্টেট জঙ্গি সংগঠনের প্রধান আবু বকর আল বাগদাদি। ভারতীয় সময় রবিবার সকালে মার্কিন প্রেসিডেন্টের যে টুইট ঘিরে গোটা দুনিয়া জুড়ে শোরগোল দেখা দেয়, কয়েক ঘণ্টা পরে সেই ঘোষণাই করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এ দিন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ট্রাম্প বলেন, ‘‘উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় বাহিনীর রাত্রিকালীন অভিযানের সময় কুকুরের মতো মৃত্যু হয়েছে বাগদাদির।’’ আইএস প্রধানের সঙ্গে বহু জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ট্রাম্প। কীভাবে মৃত্যু হয় বাগদাদির? তাও বিস্তারিত জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বলেন, ‘‘ছুটতে ছুটতে একটি সুড়ঙ্গে ঢুকে পড়েছিল বাগদাদি। গোটা রাস্তাটা সে গোঙাচ্ছিল, কাঁদছিল এবং চেঁচাচ্ছিল।’’ মার্কিন বাহিনীর জেরে বাগদাদি যে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল তা জানিয়েছেন ট্রাম্প। এর পর সে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিজেকে ও তার তিন সন্তানকে উড়িয়ে দেয় বলেও জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় সকলের দেহ।
কীভাবে শুরু হয়েছিল মার্কিন বাহিনীর অভিযান? তাও বর্ণনা করেছেন ট্রাম্প। ঘণ্টাখানেক হেলিকপ্টারে যাওয়ার পর খোঁজ মিলেছিল আইএস প্রধানের। আইএস প্রধানকে খতম করার মতো অপারেশনে রাশিয়া, সিরিয়া, তুরস্ক ও কুর্দদের সাহায্যের কথাও উল্লেখ করেছেন মার্কিন প্রেসিড়েন্ট। বলেন, ‘‘রাতে স্পেশাল ফোর্স উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় একটি বিপজ্জনক অভিযান চালিয়েছে। গৌরবের সঙ্গে সেই অভিযান শেষও হয়েছে।’’ তবে ঠিক কোথায় যে অভিযান চালানো হয়েছিল তা নির্দিষ্ট করে জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন: রফা হতেই ‘ছুটি’ চৌটালার বাবার, মুখ্যমন্ত্রী খট্টরই, সঙ্গী দুষ্মন্ত
আরও পড়ুন: মেধাবী ছাত্র, ক্লাব ফুটবলে স্টার, সব ছেড়ে হাতে বন্দুক তুলে নেন বাগদাদি
২০১৪ সালে নিজেকে ‘খলিফা’ হিসাবে ঘোষণা করেন আবু বকর আল বাগদাদি। তার পর থেকে হিংসার নিরিখে অন্যান্য সব জঙ্গি সংগঠনকে টেক্কা দিয়ে দিয়েছিল আইএস। ইরাক ও সিরিয়ার বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে কার্যত তাণ্ডব শুরু করে তারা। মধ্য এশিয়ার ওই গণ্ডি ছাড়িয়েও তারা পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে হামলা চালায়। এর মধ্যেই একাধিক বার বাগদাদির মৃত্যুর খবরও ছড়িয়ে পড়ে। তবে পরে তা ভুয়ো প্রমাণ হয়। কিন্তু, গত কয়েক বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-রাষ্ট্র সহ আন্তর্জাতিক শক্তির পাল্টা অভিযানে কার্যত কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল ইসলামিক স্টেট। বার বার জায়গা বদলাতে হচ্ছিল বাগদাদিকেও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মার্কিন বাহিনীর হাতের নাগালে চলে আসে আইএস প্রধান।