মোদী, আদিত্যনাথদের দেওয়া উপহার গোপন করেছেন ট্রাম্প? — ফাইল ছবি।
বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের দেওয়া উপহার সরকারি ‘তোষাখানা’য় জমা না দেওয়ার অভিযোগ এ বার আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। ‘ডেমোক্র্যাটিক কংগ্রেসনাল কমিটি’ একটি রিপোর্টে এমনই দাবি করা হয়েছে। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিদেশি নেতাদের দেওয়া মোট আড়াই লক্ষ ডলার মূল্যের উপহার ট্রাম্প এবং তাঁর পরিবার (প্রেসিডেন্ট পদে থাকার সময় তাঁর পরিবার ছিল আমেরিকার ফার্স্ট ফ্যামিলি) প্রকাশ্যে আনেননি। তার মধ্যে রয়েছে ৪৭ হাজার ডলারের উপহার, যেগুলি তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে দিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ।
ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, সৌদি থেকে দেওয়া তলোয়ার, ভারতের গয়না এবং এল সালভাদর থেকে পাওয়া ট্রাম্পের একটি বিশাল পোর্ট্রেটের কথা গোপনে রেখেছিলেন ট্রাম্প। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন ট্রাম্প। এই উপহারগুলি সেই সময়ই তাঁর পাওয়া। নিয়ম অনুযায়ী, বিদেশি রাষ্ট্রনেতারা যে উপহার সামগ্রী দেন তা জমা করতে হয় সরকারি ভান্ডারে। পরিভাষায় যা তোষাখানা। কিন্তু ইদানীং দেখা যাচ্ছে, অনেক রাষ্ট্রনেতার বিরুদ্ধেই সেই উপহার সামগ্রী সরকারি ভান্ডারে জমা না দেওয়ার অভিযোগ উঠছে।
সম্প্রতি কার্যত একই ধরনের অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা পিটিআই প্রধান ইমরান খানের বিরুদ্ধে। সে ক্ষেত্রে বলা হয়েছিল, যে সমস্ত উপহার তোষাখানায় জমা পড়ার কথা ছিল, দেশের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তা জমা দেননি ইমরান। জমা যে দেননি, তা-ও গোপন করে গিয়েছেন তিনি। এই প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন ইমরানের দেওয়া নির্বাচনী হলফনামায় গোঁজামিলের অভিযোগ করেছে। আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি রাখার দায়ে মামলা শুরু হয়েছে ইমরানের বিরুদ্ধে। জারি হয়েছিল গ্রেফতারি পরোয়ানাও।
আমেরিকার ওই কমিটির রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে ৭৬ বছরের ট্রাম্প এবং তাঁর পরিবার (ফার্স্ট ফ্যামিলি থাকাকালীন) শতাধিক এমন বিদেশি উপহারের কথা গোপন করে গিয়েছেন আগাগোড়া। যার সম্মিলিত মূল্য প্রায় আড়াই লক্ষ ডলার। তার মধ্যে ১৭টি উপহার ভারতের দেওয়া। যার মূল্য ৪৭ হাজার ডলার।
আন্তর্জাতিক রাজনীতির ওয়াকিবহাল মহল ইমরানের ঘটনার সঙ্গে হুবহু মিল খুঁজে পাচ্ছেন ট্রাম্পের। ঘটনাচক্রে, অন্য একটি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করা হতে পারে, এই আশঙ্কায় ট্রাম্প তাঁর অনুগামীদের পথে নামার বার্তাও দিয়ে রেখেছেন। ঠিক যেমন করেছিলেন ইমরানও।