রুশ গোয়েন্দা, ট্রাম্প শিবিরের যোগাযোগ নিয়ে নয়া বিতর্ক

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে গোপনে আলোচনা করার অভিযোগ ওঠায় সদ্য পদত্যাগ করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:৫৪
Share:

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে গোপনে আলোচনা করার অভিযোগ ওঠায় সদ্য পদত্যাগ করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন। এ বার ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার শিবিরের কয়েক জনের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ আনল মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। ওই তালিকায় রয়েছে ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ আরও কয়েক জন।

Advertisement

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ফোন রেকর্ড খতিয়ে দেখে মঙ্গলবার এফবিআই বলেছে, নির্বাচনী প্রচার চলাকালীন যে সময়ে ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কমিটিতে রুশ হ্যাকিংয়ের প্রমাণ মিলেছিল, তখনই গোয়েন্দারা জানতে পারেন ট্রাম্প শিবিরের সঙ্গে রুশ গোয়েন্দা কর্তাদের টেলি যোগাযোগের কথা। তখন তাঁরা জানার চেষ্টা করেন, নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে তলে তলে রুশ হ্যাকারদের সঙ্গে ট্রাম্প শিবিরই যোগাযোগ রাখছে কি না। এফবিআই দাবি করে, এখনও তেমন পারস্পরিক যোগাযোগের প্রমাণ মেলেনি। তবে রুশ গোয়েন্দা কর্তাদের সঙ্গে ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠরা যে কথা বলেছেন, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

মার্কিন দৈনিকে এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পরেই চটেছেন প্রেসিডেন্ট। এফবিআইকে আক্রমণ করে তাঁর টুইট, ‘‘আমাদের রাজনীতিতে এনএসএ বা এফবিআইয়ের নাক গলানো উচিত নয়। এই রুশ যোগাযোগের ব্যাপারটা অর্থহীন। যে সব ভুল সিদ্ধান্তে হিলারি ক্লিন্টনের শিবির হেরে গিয়েছে, সেই ভুল চাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে এখন।’’ যদিও এফবিআইয়ের দাবি, তারা এই যোগাযোগের খুব সামান্য অংশই জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের হাতে তুলে দিতে পেরেছে। এ সব প্রমাণ তাদের হাতে আসার সময়ে প্রায়শই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে নিয়ে প্রশংসা শোনা গিয়েছে ট্রাম্পের গলায়। নির্বাচনী প্রচারে তো ট্রাম্পও বলেছিলেন, তাঁর আশা হিলারি ক্লিন্টনের ইমেল চুরি করে সেগুলো প্রকাশ্যে আনুক রুশ গোয়েন্দা দফতর।

Advertisement

আপাতত ফ্লিন ছাড়া ট্রাম্প শিবিরের আর এক জন উপদেষ্টার নামই জানিয়েছে এফবিআই— পল মানাফোর্ট, গত বছর যিনি ট্রাম্পের প্রচার শিবিরের চেয়াম্যান ছিলেন। ইউক্রেনে রাজনৈতিক পরামর্শদাতা হিসেবেও তিনি কাজ করেছেন। এফবিআইয়ের দাবি উড়িয়ে মঙ্গলবার মানাফোর্ট বলেছেন, ‘‘এটা অবাস্তব। আমি জ্ঞানত কোনও রুশ গোয়েন্দা অফিসারের সঙ্গে কথা বলিনি। রুশ সরকার বা পুতিন প্রশাসনের কোনও বিষয়ে আমি জড়িত ছিলাম না।’’

আরও পড়ুন।

আগুন নিয়ে খেলছে ভারত: তাইওয়ান প্রশ্নে তীব্র হুঁশিয়ারি চিনের

গত মাসেই মার্কিন গোয়েন্দা দফতরের একটি রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসে। তাতে বলা হয়, নির্বাচনে আংশিক হস্তক্ষেপ করে রুশ সরকার ট্রাম্পকে সাহায্য করেছে। তবে ট্রাম্প শিবিরের কারও তাতে হাত ছিল কি না, সেটা রিপোর্টে বলা হয়নি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দু’দিন পরে রুশ সংবাদসংস্থাকে দেওয়া এক বিবৃতিতে রাশিয়ার উপ-বিদেশমন্ত্রী সের্গেই এ রিয়াখভ বলেছিলেন, ‘‘প্রচার চলাকালীন রুশ অফিসার এবং ট্রাম্পের শিবিরের যোগাযোগ ছিল।’’ সেই সময়ে ট্রাম্পের ট্রানজিশন টিমের মুখপাত্র হোপ হিকস এই বিবৃতি ঠিক নয় বলে দাবি করেছিলেন।

মানাফোর্ট ছাড়া ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ যে তিন জনের উপরে নজর রেখেছিল
এফবিআই, তাঁরা হলেন কার্টার পেজ (ব্যবসায়ী ও ট্রাম্প শিবিরের বিদেশনীতি সংক্রান্ত পরামর্শদাতা), রজার স্টোন (বহু দিনের রিপাবলিকান অনুগত) এবং মাইকেল ফ্লিন। এঁরা সবাই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ট্রাম্প প্রশাসনে যোগ দেওয়ার তিন সপ্তাহ পরেনিরাপত্তা উপদেষ্টার পদ ছাড়তে হয়েছে ফ্লিনকে। এফবিআইয়ের নয়া তথ্যে রুশ যোগাযোগের প্রমাণ ক্রমশ জোরদার হচ্ছে। সব দেখে রুশ পার্লামেন্টের এক সদস্যের মত, ক্রমশ কোণঠাসা হচ্ছেন ট্রাম্প।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement