আগুন নিয়ন্ত্রণে দমকলবাহিনী। বুধবার মধ্য লন্ডনের রাস্তায়। ছবি: রয়টার্স।
দুপুর সাড়ে বারোটা। অফিস-বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ব্যস্ততা চরমে। কফিশপ ও রেস্তোরাঁ ভিড়ে ঠাসা। এর মধ্যেই কিঙ্গসওয়ের ফুটপাথের একটি ম্যানহোল দিয়ে বেরিয়ে আসতে থাকে কালো ধোঁয়া।
ক্রমশ ওই বিষাক্ত ধোঁয়ার পরিমাণ বাড়তে থাকে। এর পর তা আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কারণ কাছেই যে ভারতীয় হাই কমিশনের অফিস এবং লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স! ফলে, সঙ্গে সঙ্গেই খালি করে দেওয়া হয় ওই এলাকা। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে দমকলবাহিনী।
সূত্রের খবর, আজ স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৪০ মিনিট নাগাদ কিঙ্গসওয়ের রাস্তায় ম্যানহোলের ঢাকনা দিয়ে আচমকা ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। ধীরে ধীরে কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়তে থাকে গোটা হলবর্নের রাস্তায়। কাছেই হলবর্ন টিউব স্টেশন। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ওই স্টেশনটি। তবে ওই স্টেশনের কোনও ক্ষতি হয়নি বলেই জানা গিয়েছে। রাস্তার নীচ দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের তার থেকেই ওই ভয়াবহ আগুন ছড়িয়েছে বলে মনে করছেন দমকলকর্মীরা।
ধোঁয়ার জেরে প্রায় ২০০০ মানুষকে নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মধ্য লন্ডনের বহুতলগুলির বিদ্যুৎ পরিষেবাও বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এলাকার রাস্তাঘাটও। গাড়ির চালকদের অন্য রাস্তা দিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ।
কয়েকটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গিয়েছে, রাস্তার নীচ থেকে গলগল করে বেরিয়ে আসছে ঘন কালো ধোঁয়া। মুহূর্তের মধ্যেই সারা আকাশে ছেয়ে গিয়েছে বিষাক্ত ওই ধোঁয়া। ধোঁয়ায় ঘনত্ব এতটাই বেশি যে, চারপাশের কিছুই দেখা যাচ্ছে না। এলাকার বিভিন্ন অফিস, রেস্তোরাঁ থেকে হুড়োহুড়ি করে বেরিয়ে আসছে আতঙ্কিত লোকজন।
মধ্য লন্ডনের ওই এলাকাতেই রয়েছে ভারতীয় হাই কমিশন অফিস এবং লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স। ভারতীয় হাই কমিশনের এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘ধোঁয়া বেরোনোর পর যখন অ্যালার্ম বেজে ওঠে, তখন আমাদের অফিসেও সতর্কতা জারি করে দেওয়া হয়েছিল। নিরাপদেই রয়েছি আমরা।’’ পাশাপাশি, সতর্কতা জারি হয়েছে লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্সেও। পড়ুয়াদের ওই এলাকায় যেতে নিষেধ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে, খালি করে দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু অংশ।
লন্ডন দমকল বাহিনীর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, বিদ্যুতের গোলযোগের জেরেই ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ড। তিনি আরও জানান, যত ক্ষণ না বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থাগুলি বিদ্যুৎ পরিষেবা বিচ্ছিন্ন করছে, তত ক্ষণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না।