প্রতীকী ছবি।
হিসেবের সামান্য এ-দিক ও-দিক, সামান্য ভুলচুকে ঘটে যেতে পারত বড়সড় দুর্ঘটনা। মাঝ আকাশে তিন-তিনটি বিমান পরস্পরের কাছে চলে এসেছিল। কোনও ক্রমে দূরে সরে গিয়ে অঘটন এড়ায় বিদেশি বিমান। দিন তিনেক আগে ঘটনাটি ঘটে প্রতিবেশী বাংলাদেশের আকাশে।
ওই ঘটনার পরে বাংলাদেশের আকাশসীমা পেরিয়ে কলকাতার আকাশে ঢুকে বিমানবন্দরের এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের (এটিসি) কাছে অভিযোগ জানান একটি বিদেশি উড়ান সংস্থার বিদেশি পাইলট। কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, বিদেশি পাইলটের অভিযোগ মূলত ঢাকা এটিসি-র অফিসারদের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের কথা কলকাতা থেকে দিল্লিকে জানানো হয়েছে। দিল্লির সঙ্গে এই বিষয়ে প্রতিবেশী দেশের অফিসারদের কথা হবে।
ঠিক কী হয়েছিল সে-দিন?
চিনের উড়ান সংস্থা এয়ার চায়না যাত্রী নিয়ে বেজিং থেকে দুবাই যাচ্ছিল। চিন থেকে বিমানটি প্রথমে মায়ানমার এবং পরে বাংলাদেশের আকাশে ঢোকে। বিমানটি ৩৬ হাজার ফুট উঁচুতে উড়ছিল। কলকাতার এটিসি অফিসারেরা জানান, সাধারণ ভাবে বিদেশি বিমান খুব কম সময়ই বাংলাদেশের আকাশে থাকে। কয়েক মিনিটের মধ্যে ঢুকে আসে কলকাতার আকাশসীমায়। বাংলাদেশের সীমান্ত পেরোনোর সময় সেই বিমান কত উচ্চতায় থাকবে, তা নিয়ে কলকাতার এটিসি-র সঙ্গে কথা বলেন ঢাকা এটিসি-র অফিসারেরা। তাই বাংলাদেশের আকাশে পারতপক্ষে কোনও বিমানের উড়ান-উচ্চতা আচমকা বদল করা হয় না। করলেও আলোচনা করা হয় কলকাতার সঙ্গে।
কিন্তু ঘটনার দিন এয়ার চায়নার পাইলটকে ৩৬ হাজার ফুট থেকে আরও উপরে ওঠার নির্দেশ দেওয়া হয়। কলকাতা এটিসি সেটা জানতে পারেনি। বাংলাদেশের আকাশেই তখন ৩৭ হাজার ফুট উচ্চতায় ছিল জার্মানির একটি পণ্য বিমান। দুবাই থেকে সেটি হংকং যাচ্ছিল। নিয়ম অনুযায়ী মাঝ আকাশে উপর-নীচে দু’টি বিমানের মধ্যে ন্যূনতম এক হাজার ফুটের ব্যবধান থাকতেই হবে।
সে-দিন এয়ার চায়নার বিমান ৩৬ হাজার ফুট ছেড়ে উপরের দিকে একটু ওঠার সঙ্গে সঙ্গে জার্মানির পণ্য বিমানের ককপিটে পাইলট সতর্কবার্তা পান। একই বার্তা পান এয়ার চায়নার পাইলটও। নীচের দিক থেকে একটি বিমানকে তাঁর দিকে উঠে আসতে দেখে জার্মান পাইলট বিমান নিয়ে আরও উপরে উঠে যান। কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, সেই সময় ৩৮ হাজার ফুট উপর দিয়ে যাত্রী নিয়ে ইতিহাদ উড়ান সংস্থার বিমান চিনের গুয়াংঝাও থেকে আবু ধাবি যাচ্ছিল। জার্মান বিমান আরও উপরে উঠতে শুরু করায় ইতিহাদের পাইলট সতর্কবার্তা পেতে শুরু করেন। দুর্ঘটনা এড়াতে তিনি আরও উপরে উঠে যান।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ঘটনাটি ঘটে কলকাতা ও চট্টগ্রামের মধ্যে। এই ঘটনার কয়েক মিনিটের মধ্যে কলকাতার আকাশসীমায় ঢুকে এয়ার চায়নার পাইলট অভিযোগ করেন।