দু’দিন আগে মাঝরাতে নৃশংস ভাবে কুপিয়ে গলা কেটে খুন করা হয়েছিল বৃদ্ধ বৌদ্ধ ভিক্ষুকে। শনিবার পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবন এলাকার বৈশারি মঠে ওই খুনের ঘটনায় মায়ানমারের দুই নাগরিক-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে দু’জন রোহিঙ্গা মুসলিম। নাম, আব্দুর রহিম (২৫) এবং মহম্মদ জিয়া (২৬)। ধরা হয়েছে সা মং চাক (৩৫) নামে এক ব্যক্তিকেও। প্রত্যেককেই তাদের বাড়ি থেকে পাকড়াও করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার বৈশারি মঠের আশপাশে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গিয়েছিল রোহিঙ্গা মুসলিম দুই ব্যক্তিকে। পঁচাত্তর বছরের মাউং শই উ নামে ওই বৌদ্ধ ভিক্ষু তাঁর ছেলের কাছে এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন বলে দাবি পরিবারের। তিনি নাকি ছেলেকে এমনটাও বলেছিলেন যে তাঁর সঙ্গে অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটতে পারে। ছেলেকেও সাবধান থাকতে পরামর্শ দেন মাউং।
গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে নির্জন এলাকায় বৈশালী মঠে একাই থাকতেন ওই ভিক্ষু। এক গ্রামবাসী শনিবার ভোরে খাবার দিতে ভিক্ষুর ঘরে যান। তিনিই প্রথম দেখেন রক্তে ভেসে যাচ্ছে মেঝে। এক পাশে পড়ে আছে তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ। যদিও এই ঘটনায় জঙ্গি হস্তক্ষেপ উড়িয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, পারিবারিক হিংসার জেরেই হত্যাকাণ্ড। ধৃতদের জেরা করে তথ্য জোগাড়ের চেষ্টা করছে পুলিশ।
মাউংয়ের খুনে সন্দেহভাজনদের গ্রেফতারের পাশাপাশি এ দিনই আবার বাংলাদেশের প্রথম সমকামী পত্রিকার সম্পাদক জুলহাশ মান্নানকে (৩৫) হত্যার অভিযোগে এক জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জুলহাশের মতোই গত মাসে খুন হয়েছিলেন সমকামী আন্দোলনে তাঁর সঙ্গী বছর পঁচিশের যুবক মেহবুব তনয়।
সাত জঙ্গি বন্দুক এবং চাপাতি নিয়ে বাড়িতে ঢুকে তাঁদের উপর চড়াও হয়েছিল বলে অভিযোগ।
পুলিশ আজ সকালে কুষ্টিয়া থেকে শরিফুল ইসলাম ওরফে শিহাব (৩৭) নামে আনসারুল্লা বাংলা টিমের (বাংলাদেশে আল কায়দার শাখা সংগঠন) এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। জেরায় শিহাব জানিয়েছে, শুধু আনসার বাংলা নয়, সে আগে হুজিরও সদস্য ছিল। তার দাবি, ‘‘জুলহাশদের নিকেশ করতে যাদের নিয়োগ করা হয়েছিল, তারা প্রত্যেকেই ভাল রকমের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। দু’মাস আগে খুনের ছক কষা হয়েছিল। জুলহাশরা ইসলাম নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি করছিল বলেই ওদের নিশানা করা হয়েছে।’’
খুনের পর থেকে খুলনায় লুকিয়ে ছিল শিহাব। তাকে হাতে পাওয়া বড় সাফল্য বলে মনে করছে ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশ।