মহম্মদ শামি। — ফাইল চিত্র।
দিন দুয়েক আগে রঞ্জি ট্রফিতে আসন্ন মধ্যপ্রদেশ এবং কর্ণাটক ম্যাচের দল ঘোষণা করেছে বাংলা। সেই দলে নেই মহম্মদ শামির নাম। একে তো অস্ট্রেলিয়া সফরের দলে জায়গা পাননি। তার উপর র়ঞ্জির দলেও নাম না থাকায় জল্পনা তৈরি হয়েছে জোরে বোলারকে নিয়ে। সূত্রের খবর, লাল বলের ক্রিকেটে হয়তো আর দেখাই যাবে না ২২৯টি টেস্ট উইকেটের মালিককে। তিনি এখন মন দিচ্ছেন সাদা বলের ক্রিকেটেই।
গত বছর এক দিনের বিশ্বকাপ খেলার পর থেকেই আর দেখা যায়নি শামিকে। ঘরোয়া বা আন্তর্জাতিক কোনও ধরনের ক্রিকেটেই খেলেননি। তবে মাস দুয়েক আগে থেকে তাঁর ফেরা নিয়ে বার বার জল্পনা তৈরি হয়েছে। কখনও বলা হয়েছে নিউ জ়িল্যান্ড সিরিজ়ে ফিরবেন। কখনও বলা হয়েছে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ়ে ফিরবেন। তার আগে রঞ্জিতে খেলবেন। তবে কোনওটিতেই এখনও শামিকে দেখা যায়নি। এ দিকে তিনি প্রতিনিয়ত নিজের শারীরিক কসরতের ছবি, ভিডিয়ো পোস্ট করছেন। বেঙ্গালুরু টেস্টের পরে পুরোদমে বলও করেছেন।
শামির ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, ৩৪ বছর বয়সী জোরে বোলার শারীরিক ধকলের কারণেই লাল বলের ক্রিকেট নিয়ে আর ভাবছেন না। তিনি মনে করছেন, লাল বলের ক্রিকেটের ধকল নেওয়ার মতো জায়গায় শরীর আর নেই। বয়সও বেড়ে গিয়েছে। তাই কেরিয়ারের বাকি সময়টা সাদা বলের ক্রিকেটেই খেলতে চান।
সাদা বলের ক্রিকেটে খেলতে চান বলেই দেশের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে খেলার কথা ভাবছেন শামি। বাংলা ক্রিকেটের সূত্র মারফত সেরকমই জানা গিয়েছে। সাদা বলের ক্রিকেটে নেমে নিজেকে ঝালিয়ে নিতে চাইছেন তিনি। মুস্তাক আলিতে বাংলার প্রথম ম্যাচ পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ২৩ নভেম্বর।
সাদা বলের ক্রিকেটের ধকল যে তিনি সামলাতে পারবেন, সেটা বোঝা গিয়েছিল গত বছর এক দিনের বিশ্বকাপের সময়। প্রথম চারটি ম্যাচ না খেলেও ২৪টি উইকেট নিয়ে সে বার সর্বাধিক উইকেটশিকারী হয়েছিলেন।
অস্ট্রেলিয়া টেস্টের দলে না থাকার পরে শোনা গিয়েছিল, সফরের মাঝপথে শামিকে সে দেশে পাঠানো হতে পারে। বোর্ডের থেকে ফিট ছাড়পত্র পেয়ে গেলেই তিনি অস্ট্রেলিয়ায় রওনা দিতে পারেন। তবে বাংলা দলে সুযোগ না পাওয়ার পর সেই সম্ভাবনাও কমেছে।
গত মাসে এক অনুষ্ঠানে শামি বলেছিলেন, “অস্ট্রেলিয়া সফর এখনও অনেক দেরি। এখন নিজেকে ফিট রাখতে হবে। দেখা যাক ওখানে যাওয়ার আগে কতটা শক্তিশালী হতে পারি। মাঠে আরও কিছুটা সময় কাটাতে চাই। যদি ফিট হয়ে যাই এবং আট-দশ দিনের সময় পাই, তা হলে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার আগে একটা-দুটো ঘরোয়া ম্যাচ খেলার ইচ্ছা রয়েছে। জানি না কবে খেলতে পারব। তবে যে দিন মনে হবে ২০-৩০ ওভার বল করতে পারব এবং চিকিৎসকদের অনুমতি পাব সে দিনই দৌড়ে খেলতে চলে যাব।”
তার পরেই অধিনায়ক রোহিত শর্মা বলেছিলেন, “সত্যি বলতে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ়ে শামিকে ভাবা কঠিন। শামির হাঁটু ফুলে রয়েছে। যে কারণে ওর দলে ফেরা পিছিয়ে গিয়েছে। জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে (এনসিএ) চিকিৎসক এবং ফিজ়িয়োরা দেখছেন শামিকে।”
শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া সফরের দলে জায়গা হয়নি শামির। দল ঘোষণা হওয়ার পর শামি বোর্ড এবং সমর্থকদের কাছে ক্ষমাও চেয়ে নেন। প্রতিশ্রুতি দেন, লাল বলের ক্রিকেটে খুব শীঘ্রই ফিরবেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে সেই সম্ভাবনা কম। হয়তো কোনও সময়ে আর কয়েকটি টেস্টে দেখা যেতে পারে তাঁকে। কিন্তু পাকাপাকি ভাবে টেস্ট থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার কথাই ভাবছেন শামি।