দুর্ঘটনাস্থলে নিহতদের উদ্দেশে প্রার্থনা পথচারীদের। ছবি: রয়টার্স
কানাডার লন্ডন শহরে গাড়ি চাপা দিয়ে একই পরিবারের চার জনকে হত্যার ঘটনাকে ‘জাতিবিদ্বেষ’ বলে আখ্যা দিল পুলিশ। এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, ‘‘এই জঘন্য, নারকীয় ঘটনায় আমরা হতভম্ব, শোকস্তব্ধ। এ ধরনের জাতিবিদ্বেষ ও হিংসা এ দেশে কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।’’
ঘটনাটি রবিবারের। কানাডার দক্ষিণ-পূর্বের ছোট্ট শহর লন্ডনে এক ট্রাকচালক ট্রাফিক সিগন্যাল ভেঙে এক পরিবারের পাঁচ জনকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থলেই মারা যান চার জন— এক ৭৪ বছর বয়সি বৃদ্ধা, তাঁর ৪৬ বছর বয়সি ছেলে সৈয়দ আফজ়ল, সৈয়দের স্ত্রী ৪৪ বছর বয়সি মাদিহা সলমন এবং তাঁদের মেয়ে ১৫ বছর বয়সি ইয়ুমনা আফজ়ল। গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি তাঁদের ন’বছরের ছেলে ফৈয়জ় আফজ়ল। তার আঘাত গুরুতর হলেও আজ হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, ছেলেটির আর প্রাণসংশয় নেই।
প্রথমে ভাবা হয়েছিল, এটা দুর্ঘটনা। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শীদের কথা শুনে পুলিশের মনে সন্দেহ জাগে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, সে দিন লালবাতি ভেঙে কালো ট্রাকটি দানবের মতো ওই পরিবারের দিকে ধেয়ে যায়। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই পিষে দেয় পাঁচ জনকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান যে, আক্রান্তদের চেহারা ও পোশাক দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল তাঁরা মুসলিম।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ট্রাকচালক ২০ বছর বয়সি নাথানিয়েল ভেল্টম্যান। সে টরন্টো থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরের এই লন্ডন শহরেরই বাসিন্দা। সোমবার তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার সঙ্গে কোনও সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের যোগ নেই বলেই জানিয়েছে পুলিশ। এর আগে কোনও অপরাধের জন্য পুলিশের খাতায় তার নামও ওঠেনি বলে জানা গিয়েছে। জেরায় যুবক তার মুসলিম বিদ্বেষের কথা স্বীকার করে নিয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
আফজ়লদের পরিবার বছর ১৪ আগে পাকিস্তান থেকে এসেছিল বলে পারিবারিক সূত্রে খবর। প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো জানিয়েছেন, বালক ফৈয়জ়ের সব দায়িত্ব নেবে সরকার।