গর্ব করার মতো খবরটা বার বারই ভেসে উঠছিল টেলিভিশনের পর্দায়। হবে না-ই বা কেন? অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন যে এক বাঙালি! তবে অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নোবেল পেয়েছেন আরও দুই অর্থনীতিবিদ। প্রাপকদের তালিকায় রয়েছেন অভিজিতের স্ত্রী এস্থার ডাফলো-ও। ভাবছেন, এমনটা এর আগে কখনও হয়েছে কি? হয়েছে, তাঁরা কারা জানেন?
আম বাঙালির কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু জুড়েই যেন এখন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে অভিজিৎ ছাড়াও নজর কাড়ছেন তাঁর ৪৬ বছরের স্ত্রী এস্থার ডাফলো। ২০১৫-তে অভিজিতকে বিয়ে করেন এস্থার ডাফলো। তাঁদের একমাত্র সন্তানের জন্ম হয়েছিল ২০১২-তে।
সালটা ১৯৯৯। মার্কিন মুলুকের নামজাদা বিশ্ববিদ্যালয় ম্যাসাচুসেট্স ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে অর্থনীতিতে পিএইডি করছিলেন এস্থার। সে সময় তাঁর জয়েন্ট সুপারভাইজার ছিলেন অভিজিৎ।
সালটা ২০১৪। জন ও’কিফের সঙ্গে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পেয়েছিলেন নরওয়ের মে-ব্রিট মোজেস ও এডওয়ার্ড মোজেসও। মোজেস দম্পতির এমন কাণ্ডে যারপরনাই আনন্দে ভেসেছিল স্ক্যান্ডিনেভিয়ান ফুটবলপাগল ওই ছোট্ট দেশটি।
একসঙ্গে নোবেল পাওয়া নরওয়ের ওই দম্পতি কিন্তু প়ড়াশোনাও করেছেন একই হাইস্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে সহপাঠী হলেও মে-ব্রিটের সঙ্গে হাইস্কুল তেমন একটা ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠেনি এডওয়ার্ডের। বিশ্ববিদ্যালয়ে একসঙ্গে পড়াশোনার সময় থেকে তাঁদের সম্পর্কের শুরু। পেশাদার জীবনে তো বটেই ব্যক্তিগত পরিসরেও ছড়িয়ে পড়েছিল।
১৯০৩-তে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পেয়েছিলেন তিন জন। মারি কুরি ও পিয়ের কুরি এবং আতোয়াঁ অরি বেকারেল। সে বছর একটা রেকর্ডও গড়েছিলেন মারি কুরি। তিনিই প্রথম মহিলা সে বছর নোবেল পান।
পোল্যান্ডের জন্মানো মারির ফরাসি স্বামীর মৃত্যু হয়েছিল পথদুর্ঘটনায়, ১৯০৬ সালে। সে ঘটনায় ভেঙে পড়লেও গবেষণা থামাননি মারি। ১৯১১-তে ফের নোবেল লাভ করেন তিনি। এ বার রসায়নে। এখনও পর্যন্ত মারি কুরিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি দু’বার নোবেল পেয়েছেন। এবং তা-ও আবার দু’টি ভিন্ন বিভাগে।
মা-বাবার মতোই একই পথের পথিক ছিলেন আইরিন জোলিয়ো কুরি। স্বামী ফ্রেদেরিক জলিয়ো-র সঙ্গে মিলে নোবেল পেয়েছিলেন ১৯৩৫-এ। মারি ও পিয়ের কুরির কন্যা অবশ্য তা পেয়েছিলেন রসায়নবিদ্যায়।
আর্টিফিসিয়াল রেডিয়োঅ্যাক্টিভিটিতে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য নোবেল পদক পান কুরি দম্পতি। আইরিন জোলিয়ো কুরি তাঁর মায়ের সহকারী হিসাবে নিজের কর্মজীবন শুরু করেন প্যারিসের র্যাডিয়াম ইনস্টিটিউটে। পরমাণুর গঠন নিয়ে এই দম্পতির গবেষণা ভবিষ্যতে নিউট্রনের আবিষ্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল।
১৯৪৭-এ বার্নাদো আলবার্তো হোসের সঙ্গে মিলিত ভাবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পেয়েছিলেন কার্ল কোরি ও গার্টি গোরি।
কার্ল কোরি ও গার্টি কোরি, দু’জনেই প্রাগের জার্মান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই কার্লের সঙ্গে প্রথম দেখা গার্টির। এবং প্রথম দেখাতেই প্রেম। এর পর একসঙ্গে মেডিক্যাল কলেজে পড়াশোনা। স্নাতক হওয়ার পর বিয়ে করেন তাঁরা। পরে আমেরিকায় পাড়ি দেন গোরি দম্পতি। সেই থেকেই মার্কিন নাগরিক।
সুইডেনের দম্পতি আলভা মিরডাল ও গানার মিরডাল, দু’জনেই সে দেশের সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্য ছিলেন।
১৯৭৪-এ অস্ট্রিয়ার ফ্রেদেরিক অগাস্ট ভন হায়েকের সঙ্গে যৌথ ভাবে অর্থনীতিতে নোবেল পান গানার মিরডাল। এর আট বছর পর মেক্সিকোর আলফন্সো গার্সিয়া রোবেলসের সঙ্গে শান্তির নোবেল পান আলভা।