ডাবলিনের রাস্তায় জ্বলেছে আগুন। ছবি: রয়টার্স।
একটি প্রাথমিক স্কুলের সামনে ছুরি হামলার ঘটনা আর তার জেরে নজিরবিহীন তাণ্ডব চলল রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিন শহরে। গত কাল সন্ধের সেই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩৪ জনকে গ্রেফতার করেছে আয়ারল্যান্ডের পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, গত কাল দুপুরের দিকে প্রথমে পারনেল স্কোয়ারের একটি প্রাথমিক স্কুলের সামনে ছুরি হামলার ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় তিনটি শিশু-সহ মোট চার জন আহত হন। শিশুদের বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর ভাবে জখম হয়েছেন তাদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা এক মহিলা। তাঁর অবস্থা সঙ্কটজনক। গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পাঁচ বছরের এক শিশুকন্যাও।
আয়ারল্যান্ডের পুলিশ প্রধান ড্রিউ হ্যারিস সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ছুরি হামলার পরে সমাজমাধ্যমের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে গুজব ছড়াতে থাকে যে, ছুরি নিয়ে হামলাকারী আদতে বিদেশি অভিবাসী। এর পরেই অতি দক্ষিণপন্থীদের একাংশ সিদ্ধান্ত নেন যে, তাঁরা এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাবেন। এঁরা মূলত অভিবাসী বিরোধী। সেই প্রতিবাদ আন্দোলনই হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। গোটা ডাবলিন শহর কার্যত দাঙ্গাকারীদের হাতে চলে যায়। গত রাত থেকে ১৩টি পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর চলে। ১১টি দোকান তছনছ করা হয়। চলে লুটপাটও। রাস্তায় রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে দেয় দাঙ্গাকারীরা। তিনটি বাস আর একটি ট্রামেও ভাঙচুর চালানো হয়। দাঙ্গা দমনকারী পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নেমে জখম হয়। শেষ পর্যন্ত যে ৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে চার জন মহিলাও রয়েছে।
আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকর এই তাণ্ডবকে লজ্জাজনক আখ্যা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, দাঙ্গায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ প্রধান এর মধ্যেই জানিয়েছেন, ছুরি হামলায় জড়িত সন্দেহে যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সে আয়ারল্যান্ডের নাগরিক। বয়স চল্লিশের শেষের দিকে। গত ২০ বছর ধরে সে আয়ারল্যান্ডেরই বাসিন্দা। তবে কী উদ্দেশ্যে সে শিশুদের উপরে হামলা চালিয়েছে, তা স্পষ্ট নয় এখনও।
পুলিশ জানাচ্ছে, গত কয়েক বছর ধরে অতি দক্ষিণপন্থীদের কার্যকলাপ বেড়েছে গোটা আয়ারল্যান্ডে। সম্প্রতি আইরিশ পার্লামেন্টের সামনেও তাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। তার পরেই সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে।