রবিবার রাত পোহালেই ইদ। আর তার আগেই পবিত্র মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদে বড়সড় হামলার ছক কষেছিল জঙ্গিরা। তবে পুলিশের তৎপরতায় বানচাল হয়ে গেল জঙ্গি হামলার ছক।
তবে পুলিশ-জঙ্গি সংঘর্ষের সময় নিজেকে উড়িয়ে দেয় ওই জঙ্গি। গ্র্যান্ড মসজিদের কাছে যে বাড়িটিতে পুলিশ-জঙ্গি সংঘর্ষ চলছিল, সেই বাড়িটির একটি অংশ ধসে গিয়েছে। যার জেরে আহত হয়েছেন ১১ জন।
তবে এখনও পর্যন্ত কোনও জঙ্গিগোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। যদিও এর আগের হামলাগুলির দায় নিয়েছিল ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিরা। তাই এ ক্ষেত্রেও আইএসের হাত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক জানিয়েছে, তিনটি জঙ্গি দল এই হামলার ছক কষেছিল। দু’টি মক্কায় ও অন্যটি জেড্ডায়। আর গ্র্যান্ড মসজিদে প্রার্থনা করতে আসা পুণ্যার্থীরাই মূলত এই হামলার নিশানায় ছিলেন।
সংবাদমাধ্যমের তরফে জানানো হয়েছে, পবিত্র রমজান মাসের শেষ শুক্রবার উপলক্ষে গ্র্যান্ড মসজিদে প্রার্থনার জন্য জড়ো হয়েছিলেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। তাই সেখানেই বড়সড় হামলার ছক কষেছিল জঙ্গিরা। আশঙ্কাটা আগে থেকেই ছিল। এমনকী খবরও ছিল যে, জঙ্গি হামলা হতে পারে। তাই ভোরেই এলাকা জুড়ে তল্লাশি অভিযান শুরু করে পুলিশ। সেই সময় কয়েক জন সন্দেহভাজনকেও গ্রেফতার করা হয়।
গ্র্যান্ড মসজিদের কাছে আজইয়াদ-আল-মাসাফির একটি তিনতলা বাড়িতে তখন গা ঢাকা দিয়েছিল ওই জঙ্গি। এর পরে আচমকা পুলিশকে লক্ষ করে গুলি ছুড়তে শুরু করে সে। পাল্টা জবাব দেয় পুলিশও। ওই বাড়িটিকে পুলিশ ঘিরে ফেললে আত্মঘাতী জঙ্গি নিজেকে উড়িয়ে দেয়। তার জেরে বাড়িটির একটি অংশ পুরোপুরি ধসে গিয়েছে। আহত হয়েছেন ৫ জন পুলিশকর্মী ও ৬ জন বিদেশি। গ্রেফতার হয়েছে পাঁচ সন্দেহভাজন। এদের মধ্যে এক মহিলাও রয়েছে। তবে এই ঘটনায় গ্র্যান্ড মসজিদের প্রার্থনায় কোনও রকম প্রভাব পড়েনি।
ওই হামলার পরে সৌদি আরবের টিভি চ্যানেলে যে ফুটেজ দেখানো হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, গ্র্যান্ড মসজিদের পাশের সরু অলিগলি দিয়ে ছুটছে পুলিশ ও উদ্ধারকারী দল। যে বাড়িটিতে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ হয়েছে, সেই বাড়িটির একটি অংশ ধসে পড়েছে। পাশে পার্ক করে রাখা গাড়ির উপর ভেঙে পড়েছে বাড়িটির দেওয়াল। এমনকী আশপাশের কিছু বাড়ির দেওয়ালেও লেগে রয়েছে গুলির দাগ।
এই প্রথম নয়, এর আগেও বহু বার এই গ্র্যান্ড মসজিদকে নিশানা করেছে জঙ্গিরা। ১৯৭৯ সালের হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন বহু মানুষ। এর পর ১৯৮৯ সালে হজের সময় গ্র্যান্ড মসজিদে দু’টি আত্মঘাতী বিস্ফোরণ হয়েছিল। ২০১৬ সালেও সৌদি আরবে তিনটি আত্মঘাতী বিস্ফোরণ হয়েছিল।
এ দিকে, সৌদি আরবের সঙ্গে ইরান ও কাতারের সম্পর্ক সে রকম ভাল নয়। তবে গত কালের হামলার পরে সৌদি আরবের পাশে দাঁড়িয়েছে এই দুই দেশ।