দ্য হেগ-এ রাজবাড়ি থেকে বেরিয়ে আসছেন মার্ক রুটে। ছবি: রয়টার্স।
নভেম্বরে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের আগেই অভিবাসন সংক্রান্ত প্রশ্নে শুক্রবার পড়ে গেল নেদারল্যান্ডসের মার্ক রুটের সরকার। ৫৬ বছরের রুটে দেশের সব থেকে বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা নেতা, ইওরোপের অন্যতম বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ বলে পরিচিত। চতুর্দলীয় আলোচনায় কোনও সমাধানসূত্র বেরোয়নি বলে জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘অভিবাসন নীতির প্রশ্নে জোট শরিকদের দৃষ্টিভঙ্গি অনেকটাই আলাদা, এ ব্যাপারে লুকোছাপার কিছু নেই।’’ সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজা ভিলেম আলেকজান্ডারের কাছে ইস্তফা জমা দেবেন তিনি। তবে নতুন সরকার গঠনের আগে পর্যন্ত বর্তমান মন্ত্রিসভা কাজ চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন রুটে। দেড় বছরের মাথায় সরকার পড়ে যাওয়া ‘‘খুবই দুঃখজনক, কিন্তু রাজনৈতিক বাস্তবতা’’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নে আশ্রয় চেয়ে ২০২২ সালে আবেদন করেন প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ। যাঁদের অধিকাংশই সিরিয়া, আফগানিস্তান, তুরস্ক, ভেনেজুয়েলা এবং কলম্বিয়ার নাগরিক। নেদারল্যান্ডসে আশ্রয় চেয়ে গত বছর ৪৬ হাজারেরও বেশি আবেদন জমা পড়েছিল। চলতি বছর তা ৭০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। শরণার্থী শিবিরগুলি উপচে ইতিমধ্যেই বেকায়দায় সরকার। এই পরিস্থিতিতে অভিবাসনে রাশ টানতে পারিবারিক পুনর্মিলনের ভিসা নিয়ে যুদ্ধ শরণার্থীদের আসা প্রতিমাসে দু’শোর মধ্যে ধরে রাখতে উদ্যোগী হন রুটে। প্রস্তাব না মানলে জোট ছেড়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন শরিকদের। যার বিরোধিতা করে শরিক দুই দল— ক্রিস্টেন ইউনি ও ডি৬৬। এই ব্যাপারে বুধ এবং বৃহস্পতিবারের আলোচনা পরপর ব্যর্থ হওয়ায় রুটে নিজে শুক্রবার বৈঠক করেন। কিন্তু লাভ হয়নি তাতেও।
২০২১ সালের নির্বাচনে রুটের দল ভিভিডি সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছিল। তবে একক ভাবে কোনও দল ভাল ফল করেনি। ন’মাস কাবার হয়ে গিয়েছিল জোট করে সরকার গঠনে। বর্তমান পরিস্থিতিতে নতুন করে জোট গড়ে সরকার গঠনের সম্ভাবনা বিশেষ নেই। এই অবস্থায় বিরোধী দলগুলি ইতিমধ্যেই দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে।