আহত এক মহিলাকে উদ্দার করছেন নিরাপত্তা কর্মীরা। ছবি: পিটিআই
১৭ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস নাটক-গুলিযুদ্ধের পর অবশেষে নিহত তাইল্যান্ডের বন্দুকবাজ। রাতভর কমান্ডো অভিযানে ভোরের দিকে বন্দুকবাজকে খতম করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তাইল্যান্ড পুলিশ। সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, আততায়ী ওই সেনার এলোপাথাড়ি গুলিতে অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত ৪২ জনের মধ্যে ন’জন আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন। শপিং মলের ভিতরে আরও কেউ আটকে আছেন কি না, তা জানতে শুরু হয়েছে তল্লাশি।
শনিবার সন্ধ্যার দিকে তাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্কক থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে, নাখোন রতচসিমা শহরের রাস্তায় সেনাবাহিনীর জিপ থেকে নেমে আচমকাই গুলি চালাতে শুরু করে ৩২ বছরের জাকরাপন্থ থোম্মা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, সেনা ছাউনি থেকে ওই জিপ এবং একাধিক অস্ত্র চুরি করে এনেছিল ওই সেনা। রাস্তায় গুলি চালানোর পর শহরের একটি শপিং মলে আশ্রয় নেয়। বেশ কয়েক জনকে পণবন্দি করে।
এর পর রাতের দিকে শুরু হয় কমান্ডো অভিযান। সারা রাতই আততায়ীর সঙ্গে দফায় দফায় গুলি বিনিময় চলে কমান্ডো বাহিনীর। একই সঙ্গে চলতে থাকে শপিং মল খালি করার প্রক্রিয়া। অবশেষে ভোরের দিকে কমান্ডোদের গুলিতে নিহত হয় আততায়ী সেনা। তাইল্যান্ডের অপরাধ দমন শাখার প্রধান জিরাভব ভুরেইদেজ এই খবর নিশ্চিত করেছেন। তাইল্যান্ড পুলিশের কমান্ডো বাহিনী জানিয়েছে, শতাধিক কমান্ডো অভিযানে শামিল হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: সেনা ছাউনির রাইফেল-জিপ চুরি করে শপিং মলের সামনে গুলি সৈনিকের, তাইল্যান্ডে হত ১৭
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সকালের দিকে একটি অ্যাম্বুল্যান্স আসে এবং কিছুক্ষণ পরেই একটি দেহ নিয়ে বেরিয়ে যায়। সম্ভবত, সেটিই জাকরাপন্থ থোম্মার দেহ। ওই অ্যাম্বুল্যান্স বেরিয়ে যাওয়ার পরেই শপিং মলে ঢুকতে শুরু করেন ঝাঁকে ঝাঁকে পুলিশকর্মী। মলের ভিতরে এখনও কত জন রয়েছেন, তা নিয়ে সঠিক তথ্য দিতে পারেনি পুলিশ। কী কারণে এই মারণ হামলা চালাল ওই সেনা তা নিয়ে এখনও অন্ধকারে তাইল্যান্ড পুলিশের গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন: শুধু চিনেই ৮০০! মৃত্যুর সংখ্যায় সার্স-কে পিছনে ফেলল করোনা
হামলার সময় শপিং মলের ভিতরে একটি বাথরুমে লুকিয়ে ছিলেন সত্যিয়ানি আনচেলি নামে বছর আটচল্লিশের এক মহিলা। সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে তিনি বলেন, ‘‘মনে হচ্ছিল কোনও দুঃস্বপ্ন দেখছি। আমি ভাগ্যবান যে বেঁচে গিয়েছি। যাঁরা মারা গিয়েছেন, এবং শপিং মলে এখনও ভয়ে আটকে রয়েছেন, তাঁদের জন্য আমি বেদনাহত।’’