বিলাবল ভুট্টো এবং শাহবাজ শরিফকে খুনের হুমকি। ছবি সংগৃহীত।
প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোকে দেড় দশক আগে খুন করেছিল তারা। এ বার সেই তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) গোষ্ঠী সরাসরি বেনজিরের ছেলে তথা পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী বিলাবল ভুট্টোকে খুন করার হুমকি দিল। বিলাবলের পাশাপাশি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকেও খুন করা হবে বলে জানিয়েছে কাবুল ঘনিষ্ঠ ওই বিদ্রোহী সংগঠন।
গত এপ্রিলে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) –এর নেতা ইমরান খানের সরকারের পতন ঘটিয়ে জোট সরকার গড়ে শাহবাজের ‘পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ)’ বা পিএমএল(এন) এবং বিলাবলের পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। ঘটনাচক্রে, তার পর থেকেই পাক-আফগান সীমান্তে তালিবান বিরোধী তৎপরতা শুরু করে পাক সেনা। গত অগস্টে টিটিপির সঙ্গে শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর খাইবার পাখতুনখোয়া এবং উত্তর বালুচিস্তানের আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকায় নতুন করে অভিযানে নেমেছে পাক সেনা এবং ‘কাউন্টার টেররিজম ডিপার্টমেন্ট’ (সিটিডি)-এর যৌথ বাহিনী। আর তা করতে গিয়ে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশ লাগোয়া আফগান ভূমিতেও অনুপ্রবেশের অভিযোগ উঠেছে পাক ফৌজের বিরুদ্ধে। যা নিয়ে সাম্প্রতিক কালে পাক ও আফগান বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।
পাকিস্তানের প্রথম এবং একমাত্র মহিলা প্রধানমন্ত্রী বেনজিরকে ২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বরে রওয়ালপিন্ডির লিয়াকতবাগে আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে খুন করেছিল টিটিপি। আমেরিকায় ড্রোন হামলায় নিহত জঙ্গিনেতা বায়তুল্লা মেহসুদ প্রতিষ্ঠিত এই গোষ্ঠী বরাবরই পাক সরকারের বিরোধী। ২০১৪ সালে পেশোয়ারের একটি স্কুলে হামলা চালিয়ে শতাধিক পড়ুয়াকে খুন করেছিল টিটিপি জঙ্গিরা। এর আগে ২০০৯ সালে টিটিপি-র বিরুদ্ধে ‘অপারেশন রাহ-ই-নিজত’ করেছিল পাক সেনা। পাকিস্তানের ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত সেটিই সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসবিরোধী সেনা অভিযান। কিন্তু তাতেও ফল মেলেনি। খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ টিটিপি-র। বালুচিস্তান প্রদেশের উত্তরাংশেও তাদের প্রভাব রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে শাহবাজ-বিলাবলকে খুন করার তালিবান হুমকি নিছক ফাঁকা আস্ফালন বলে উড়িয়ে দিচ্ছে না পাক গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। ঘটনাচক্রে মঙ্গলবার দুপুরে পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লার উপস্থিতিতে সে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে আফগানিস্তান সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় টিটিপি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বড় মাপের সামরিক অভিযানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার কয়েক ঘণ্টা পরেই পঞ্জাব প্রদেশে জঙ্গি বিরোধী অভিযানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ‘কাউন্টার টেররিজম ডিপার্টমেন্ট’ (সিটিডি)-এর দুই উচ্চপদস্থ কর্তাকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেয় তারা।