প্রতীকী ছবি।
বিয়ের বয়সই হয়নি পাত্র সেলামতের।
এ দিকে পাত্রী রোহায়া সেই বয়স পেরিয়ে গিয়েছেন বহু-বহু বছর আগে। প্রথা বা দেশের আইন— দুই-ই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে সব নিষেধ উড়িয়েই ইন্দোনেশিয়ায় সত্তর পার করা প্রেমিকাকে বিয়ে করল ষোলো বছরের কিশোর।
ইন্দোনেশিয়ার আইন অনুযায়ী, সেখানে মেয়েরা বিয়ে করতে পারেন ১৬ বছরে। ছেলেদের বেলায় বয়স হতে হবে অন্তত ১৯।
তা হলে কী ভাবে অসম্ভব সম্ভব হল?
গ্রামের মাথারা জানাচ্ছেন, বাধ্য হয়েই বিয়েতে মত দিয়েছেন তাঁরা। না হলে নাকি আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছিল ওই যুগল! ইন্দোনেশিয়ার সমাজ বিষয়ক মন্ত্রী যদিও জানিয়েছেন, পাত্রের যে হেতু বিয়ের বয়স হয়নি, তাই এই পরিণয়ের আইনি স্বীকৃতি নেই। শুধুমাত্র ছোট এক অনুষ্ঠানে চার হাত এক করা হয়েছে অসমবয়স্ক ওই যুগলের।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বেশ কয়েক বছর আগে মারা গিয়েছেন সেলামতের বাবা। ছোট ছেলেকে রেখে ফের বিয়ে করেছিলেন মা। সেই থেকে একা সে। ছেলেবেলায় এক বার ম্যালেরিয়া হয়েছিল সেলামতের।
সেই সময়ে তার সেবা করে সেলামতকে সুস্থ করে তুলেছিলেন রোহায়া। সেই থেকেই দু’জনের সম্পর্কের শুরু।
কনে রোহায়ার এটি তৃতীয় বিয়ে। আগের দুই পক্ষের বেশ কয়েকটি ছেলেমেয়ে রয়েছে সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধার। দক্ষিণ সুমাত্রায় তাঁদের গ্রামের প্রধান সিক আনি বলেছেন, ‘‘ছেলেটি যেহেতু অপ্রাপ্তবয়স্ক, তাই আমরা গোপনেই রাখতে চেয়েছিলাম গোটা ঘটনাটি।’’ যদিও তা চাপা থাকেনি। সম্প্রতি ওই বিয়ের পরে অনলাইনে সেই ভিডিও ছড়িয়ে যেতেই হইচই পড়ে গিয়েছে সর্বত্র।
গ্রাম প্রধানেরা জানাচ্ছেন, টাকা বা শারীরিক আকর্ষণ নয়। রোহায়ার থেকে পাওয়া স্নেহ-যত্নের টানেই তাঁকে বিয়ে করতে চায় সেলামত। বাল্যবিবাহ বিরোধী অভিযানের সঙ্গে যুক্ত এক কর্মী বলেছেন, ‘‘ছেলেটি একেবারে অপরিণত। সে মনে করেছে, একসঙ্গে না থাকলে রোহায়ার ভালবাসা পাওয়া যাবে না। আর একসঙ্গে থাকার একমাত্র উপায় বিয়ে।’’
দক্ষিণ সুমাত্রার গভর্নর অ্যালেক্স নোয়েরদিন বলেন, ‘‘দু’জনের বয়সের ফারাক প্রচুর। অনেক সময়েই দেখা যায়, কনের বয়স খুব কম। কিন্তু এই বিয়ের ক্ষেত্রে তো দেখছি, বিষয়টা একেবারে উল্টো!’’